আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় চলতি বছরে প্রথম থেকেই ব্যাহত হচ্ছে আলুর চাষ। মেঘলা আবহাওয়ায় আলুর নাবি ধসা রোগের প্রকোপ বাড়ছিল। মঙ্গলবার থেকে অকাল বৃষ্টিতে আলুর খেতে জল জমে যাওয়ায় কার্যত দিশেহারা আরামবাগ মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার চাষিরা। একই সাথে উদ্বেগে কৃষি দফতরও।
আরামবাগের চাষি দীপক মাঝি বলেন, এমনিতেই এইবছর কিছুটা দেরিতে আলু চাষ শুরু হয়েছে। বৃষ্টির দরুন খেতে জল জমে যাওয়ায় আলু পচে যাওয়ার আশঙ্কাও প্রবল। আবহাওয়ার পরিবর্তন না হলে চলতি মরসুমে আলু চাষে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভবনা রয়েছে। বেশক’দিন ধরেই আবহাওয়া মেঘলা ছিল। তাতে সমস্যা বাড়ছিলই। মঙ্গলবার থেকে রাজ্যজুড়ে বৃষ্টিতে চাষিদের দুশ্চিন্তা আরও বাড়ে। জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় কম-বেশি আলু চাষ হয়। এদিন বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে অনেক জায়গায় আলুর খেতে জল জমে রয়েছে। চিন্তার অন্ত নেই ভাগচাষিদের। এক বিঘা জমিতে আলুচাষ করতে প্রায় ২৫ হাজারের মতো টাকা খরচ হয়। এক দিকে আলুর কম দাম অন্য দিকে অকাল বৃষ্টিতে সাঁড়াশি চাপে চাষিরা।
ভাগচাষি সঞ্জিত বেরা বলেন, জমিতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি জল জমে গেছে। আলু গাছ তা সহ্য করতে পারে না। গাছের গোড়ায় জল জমে পচন শুরু হচ্ছে। ঋণ করে চাষ করা, কিন্তু আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় তারা একেবারে রাস্তায় বসলেন। অন্যদিকে, ভাগচাষী লক্ষীরাম কিস্কু বলেন, তিনি ভাগ চাষে কয়েক বিঘা চাষ করেছেন ঋণ নিয়ে। কিন্তু হঠাৎ করে বৃষ্টিতে আলুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এক বিঘা জমিতে যা খরচ হয় তার কিছু পরিমাণ টাকা উঠবে না। সরকার সহায়তা করলে জমির মালিক টাকা পাবেন কিন্তু ঋণের বোঝা তারা মাথা থেকে নামাতে পারবেন না। সরকারি সহায়তা পেলে বেশি কিছু সুরাহা তাদের হবে না। পরিস্থিতি যা রাস্তায় বসা ছাড়া আর কোনও উপায় তাদের নেই।
এই বিষয়ে আরামবাগ মহকুমার ADA সজল কুমার ঘোষ বলেন, সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ক্ষতির রিপোর্ট তৈরির কাজ চলছে। একই অবস্থা শীতকালীন সবজিতেও। বিভিন্ন সবজি জমিতে ইতিমধ্যেই জল জমতে শুরু করেছে। তাই চাষিদের সচেতন হতে হবে বলেও দাবি বিশেষজ্ঞদের।