ঋদি হক, ঢাকাঃ-মার্চ মাসের বেতন-ভাতা মেলেনি। ঘর ভাড়ার তাগিদ দিচ্ছেন বাড়িওয়ালা। ঘরের খাবারও বাড়ন্ত। এমন পরিস্থিতি পোশাক শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধ করছে না মালিক পক্ষ। মার্চের মাসের বেতন পাবেন এবং ৫ এপ্রিল থেকে পোশাক কারখানা খুলবে এমন খবরে লকডাউন, সামাজিক নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করে বেতন ভাতার আশায় হাজারো শ্রমিক মাইলের পর মাইল পায়ে হেটে ঢাকায় পৌছেন ৪ এপ্রিল। কিন্তু ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত তারা বেতন পাননি। ভরদুপুরে জলন্ত সূর্য মাথায় নিয়ে রাস্তায় হাজারো পোশাক শ্রমিকের বিক্ষোভ। করোনা রুখতে বাংলাদেশে প্রতিদিনই নতুন নতুন জেলা লকডাউনর হচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রশাসনের প্রান্তকর চেষ্টা। ঠিক সে সময় বেতনের দাবিতে রাজধানীর কয়েকটি স্থানে বিক্ষোভ দেখিয়েছে হাজারো পোশাক শ্রমিক। এসব অভুক্ত শ্রমিকের কাছে সামাজিক দূরত্ব নস্যি!
ঘটনা বুধবারের। চারিদিকের দোকানপাট বন্ধ। চলছে লকডাউন। মানুষকে রক্ষায় গোটা প্রশাসন মাঠে। সে সময় ঢাকার বাড্ডা, উত্তরা, গাজীপুর, মানিকগঞ্জসহ শিল্প অধ্যুষিত এলাকার প্রায় ১০টিরও বেশি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। অথচ করোনাভাইরাস জনিত অর্থনৈতিক সংকট সামাল দিতে গার্মেন্টসসহ রপ্তানি খাতের পাঁচ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দিয়েছে সরকার। এই টাকায় একমাত্র শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করতে হবে, এমন শর্ত জুড়ে দিয়েই ১ এপ্রিল রূপরেখা চূড়ান্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপরও বেতন মিলছে না। গাদাগাদি অবস্থায় শ্রমিকরা শ্লোগানে ফেটে পড়েন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তাদের পক্ষে দূরঅস্ত। এ অবস্থায় বাড়ছে করোনা ঝুঁকি! তবে, বৃহস্পতিবারের মধ্যে মার্চ মাসের বেতন পরিশোধের সময় বেধে দিয়ে হুশিয়ারি দিয়েছে সরকার। নির্দেশনা অমান্যকারী কারখানা মালিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন সাফ জানিয়ে দিলেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী।
বিক্ষোরত শ্রমিকরা বলেছেন, করোনাভাইরাসের ভয়ে মানুষ যেখানে ঘরের বাইরে পা রাখছেন না, সেখানে আমরা ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় প্রায় হেটে আসতে হয়েছে। ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। ৫ এপ্রিল থেকে পোশাক কারখানা খুলবে এই খবরে করোনার তোয়াক্কা না করেই ঢাকায় পৌছান তারা। মার্চ মাসের ঘর ভাড়ার জন্য বাড়ির মালিক বার বার তাগিদ দিচ্ছে। এ অবস্থায় পাওনা বেতন দিচ্ছেন পচ্ছে না। শ্রমিকরা জানান, আমরা ত্রাণ পাইনি। বেতনও না পেলে পরিবার নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। গার্মেন্টস শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের সদস্য সচিব বদরুদ্দোজা নিজাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকদের জন্য যে প্রনোদনা দিয়েছেন, তাতে বহু পোশাক কারখানার মালিকই অখুশি। কারণ, এক্ষেত্রে মালিকরা লাভবান হতে পারেননি।