দেশজুড়ে যখন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে মহাবিতর্ক চলছে এবং এই আইনের মাস্টারমাইন্ড হিসাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কে অনেকে মনে করছেন তখনই অমিত শাহের বিরুদ্ধে মাস্টার স্ট্রোক দিলেন উদ্ধব ঠাকরে। পরিস্থিতি এমনটাই যে অনেকে বলছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী তথা অমিত শাহের প্রাণভোমরা এখন উদ্ধবের হাতেই।বিজেপির শরিক দল হিসেবে যখন জোটের মধ্যে ছিলেন তখনই থেকেই উদ্ধব ঠাকরে দাবি তুলেছিলেন, বিচারক ব্রিজগোপাল হরিকিষান লোয়ার মৃত্যু-রহস্যের গভীর তদন্ত প্রয়োজন। এইবার উদ্ধবের কোটে বল। আর সুযোগ বুঝেই অমিত শাহর চাপ বাড়াতে চলেছে মহারাষ্ট্র সরকার। জানা গেছে আবার খোলা হবে বিচারক লোয়ার মৃত্যু-রহস্য মামলা। সেইসঙ্গে পুনর্বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে ভীমা কোরেগাঁও মামলারও। মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ জানিয়েছেন, ‘কেউ মোদী সরকারের সমালোচনা করলেই তাঁর গায়ে আরবান নকশাল বা অতি বাম তকমা সাঁটিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’ সেইসঙ্গেই তিনি বলেন, ‘বিচারক লোয়া মামলা চালু করার দাবি যদি ওঠে, তাহলে রাজ্য সরকার তাতে সম্মতি দেবে।’ এর থেকেই স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে , মামলার ফাইল আবার সম্ভবত খুলতে চলেছে উদ্ধবের সরকার।
রাজনৈতিকদের মতে, বিজেপি ও তাদের সভাপতি অমিত শাহকে চেপে ধরার কৌশল নিতে চলেছে বিরোধী শিবির। পাশাপাশি ভীমা কোরেগাঁও মামলার পুনর্বিচার প্রক্রিয়াও শুরু করতে চলেছে উদ্ধব সরকার। ইতিমধ্যেই চেয়ে পাঠানো হয়েছে মামলা সংক্রান্ত ফাইলগুলি। এই দুটি ক্ষেত্রেই যে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব চাপে পড়তে পারে, তা বলাই বাহুল্য।
উল্লেখ্য, গুজরাতে বিতর্কিত সোহরাবুদ্দিন হত্যা মামলার বিচারক ছিলেন লোয়া। যে মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন শাহ। নিরাপত্তার খাতিরে হাইপ্রোফাইল মামলাটি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মুম্বইয়ে। শুনানি চলার পর্বে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয় লোয়ার। নাগপুরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন লোয়া। সেই অনুষ্ঠানেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। বিচারক লোয়ার সেই আচমকা মৃত্যুর পরে নতুন বিচারক আসেন। এবং ঠিক এক মাসের মাথায় বেকসুর খালাস পেয়ে যান শাহ। এখন সেই মামলা পুনরায় খুলে বিজেপি এবং অমিত শাহ কে চেপে ধরার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক মহল বলছেন যদি এই মামলা পুনরায় খোলা হয় তাহলে নিশ্চিতভাবেই অমিত শাহ যথেষ্ট বিপাকে পড়বেন।