দেশ

‘অসহায় ভাবে ভেসে যাচ্ছে গাড়ি ‘ফোন করেও, বাঁচতে পারলেন না বেঙ্কটেশ।

গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তেলঙ্গানা, হায়দরাবাদে। এক শিশু-সহ মৃত্যু হয়েছে  ৫০ জনের। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। এখনও জলের তলায় বহু এলাকা। জোরকদমে উদ্ধারকাজ চলছে।

এমন পরিস্থিতিতে অসহায় বন্ধু চিৎকার করছে আমাকে বাঁচাও। গাড়ির ভিতরে জলে ভরে যাচ্ছে। স্রোত ক্রমশ বাড়ছে—বন্ধুর সঙ্গে ফোনে শেষ বারের মতো এই কয়েকটি কথাই হয়েছিল হায়দরাবাদের বেঙ্কটেশ গৌড়ের।। মাত্র ১ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের কল। তার পর তাঁর আর কোনও সাড়াশব্দ মেলেনি।  পরে বন্ধুর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে দেহ মেলে বেঙ্কটেশের।

পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার টানা বৃষ্টিতে হঠাৎই হড়পা বান আসায় গাড়িতে আটকে পড়েছিলেন বেঙ্কটেশ। বন্ধুর বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই রাস্তার উপরে তাঁর গাড়িটি ছিল। গাড়ির ভিতর থেকে বন্ধুর বাড়িটাও দেখতে পাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু জলের স্রোত বাড়তে থাকায় গাড়ি থেকে নামার সাহস পাচ্ছিলেন না বেঙ্কটেশ। অসহায় অবস্থায় গাড়ির ভিতর বসে অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু জলের স্তর ক্রমশ বাড়তে শুরু করলে তাঁর গাড়ির ভিতরে জল ঢুকতে শুরু করে। এ বার রীতিমতো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন বেঙ্কটেশ। একটু হেঁটে গেলেই বন্ধুর বাড়ি। কিন্তু যাওয়ার উপায় ছিল না। তাই ফোন করে বন্ধুকে পরিস্থিতির কথা জানান।

বেঙ্কটেশের বন্ধু পুলিশকে জানান, কাঁপা কাঁপা গলায় ফোনটা পেয়েই তিনি বুঝেছিলেন বেঙ্কটেশ বিপদে পড়েছে। ফোনে বেঙ্কটেশ তাঁকে বলেছিলেন, “গাড়ির ভিতর জলে ভরে গিয়েছে। জলের তোড়ে গাড়িটা একটা গাছের গায়ে আটকেছে। আমি তোমার বাড়িটা দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু বেরলেই জলের তোড়ে ভেসে যাব।” বেঙ্কটেশ ফের বলেন, “যে গাছে আমরা গাড়িটা আটকে ছিল, সেটাও ভেসে গিয়েছে। আমার গাড়িও ভেসে যাচ্ছে। বাঁচাও আমাকে।”

বেঙ্কটেশের বন্ধু বলেন, “কিছু হবে না তোমার। এই বলে আমি বেঙ্কটেশকে ভরসা দিচ্ছিলাম। যেখানে আটকে ছিল গাড়িটা, তার পাশেই ছিল একটা পাঁচিল। সেই পাঁচিল ধরে ঝুলে পড়তে বলেছিলাম ওকে। কিন্তু পারেনি। চোখের সামনে অসহায়ের মতো গাড়িসমেত বন্ধুকে ভেসে যেতে দেখলাম। পরে শুনলাম বাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই বেঙ্কটেশের দেহ উদ্ধার হয়েছে।”

Loading

Leave a Reply