রাজ্য

আমরা কি ক্রমশ যুদ্ধটা হেরে যাচ্ছি! আক্রান্তের নুতন রেকর্ড দেশে।

সারা দেশজুড়ে হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা। প্রতিদিন গড়ে চার হাজারের কাছাকাছি মানুষ নতুন করে সংক্রামিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সারা দেশজুড়ে স্বাস্থ্য কর্মীদের ওপর তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। এই যুদ্ধের প্রধান সৈনিক তারাই। অথচ হঠাৎ করেই রাজ্যজুড়ে ভিন রাজ্যে নার্সদের চাকরি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সংখ্যা বাড়ছে। ইতিমধ্যেই সাড়ে চারশোর কাছাকাছি ভিন রাজ্যের নার্স চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে নিজেদের রাজ্যে ফিরে গেছেন বলে জানা যাচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবেই সারা রাজ্য জুড়ে স্বাস্থ্যব্যবস্থা সংকটের মুখে পড়ছে তা নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই প্রবণতা যদি চলতে থাকে তাহলে এই ভয়ঙ্কর সংকটের সময় পুরো রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় মুখ থুবরে পড়বে।

আতঙ্ক জাগিয়ে শনিবার রাজ্য ছাড়লেন আরো 242 জন নার্স। রাজ্যের প্রথম সারির হাসপাতালগুলির মধ্যে পড়ে আমরি, বেলভিউ, ডিসান, চার্ণক, পিয়ারলেস ইত্যাদি। প্রথম সারির হাসপাতালগুলি থেকে এভাবে নার্সরা ইস্তফা দিয়ে চলে যাওয়ার কারণে চিকিৎসা পরিষেবা যে ভবিষ্যতে বেহাল হতে চলেছে তা নিয়ে আতঙ্কে সবাই। শুক্রবার মনিপুরের 185 জন নার্স রাজ্য ছেড়েছিলেন বলে খবর।আমরি থেকে 72 জন নার্স ইস্তফা দিয়েছেন। ডিসান হাসপাতাল এ 76 জন নার্সের ইস্তফাপত্র জমা পড়েছে। চার্নক ছাড়লেন 14 জন নার্স। EEDF থেকে হঠাৎ করেই ইস্তফা দিলেন 42 জন নার্স। আর অন্যদিকে বেলভিউ এবং পিয়ারলেস থেকে যথাক্রমে ইস্তফাপত্র পড়েছে 26 জন ও 12 জন নার্সের। বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎ কলকাতার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোম গুলিতে নার্সদের ইস্তফাপত্র জমা দেওয়ার হিড়িক লেগে যায়।

তার মধ্যেই মনিপুর সরকার কলকাতায় কর্মরত তাঁদের 185 জন নার্সকে নিজেদের রাজ্যে ফেরত নেওয়ার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করে বলে জানা গেছে। সেইমতো মনিপুরের নার্সরা কলকাতার চাকরি ছেড়ে তাঁদের নিজেদের রাজ্যে পাড়ি দেন বলে জানা গেছে। এরপরেই তীব্র সমস্যায় পড়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিং হোমগুলি। অবশ্য সূত্রের খবর, বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমের থেকে লোভনীয় মাইনে এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার কথা বলে উক্ত নার্সদের ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সূত্র থেকে জানা গেছে কলকাতার প্রতিটি বড় হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমে ভিন রাজ্যের নার্সদের সংখ্যা অধিকাংশই। পিয়ারলেস থেকে আমরি সব জায়গাতেই মেঘালয়, মিজোরাম, ত্রিপুরা, আসাম রাজ্যের নার্স দিয়ে কাজ চালানো হয়। সূত্রের দাবি এ রাজ্যে নার্সিং কলেজের সংখ্যা অত্যন্ত কম তাই প্রতিবছর যে পরিমাণ নার্সের প্রয়োজন হয় সেই তুলনায় নার্স পাশ করে বের হয় না বলেই এই পরিস্থিতি। অন্য একটি অংশ বলছে রাজ্য সরকার যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে এতদিন প্রায় কিছুই ভাবেনি এই সংকটের সময় বারবার প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে। নিজেদের রাজ্যের প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে অথচ নিজের রাজ্যে নার্স বাড়িয়ে তাদের কাজে লাগানোর কথা এতদিন সরকার ভেবে দেখেনি। এখন দেখার এই ভয়ঙ্কর সংকট থেকে রাজ্যকে কিভাবে দেখায় সরকার।

Loading

Leave a Reply