মরশুম শেষ। তবুও তাঁরা আটকে আছেন বিভিন্ন ইট ভাটায়। লকডাউনের জেরে গোটা দেশে গণ পরিবহণ ব্যবস্থা পুরোপুরি বন্ধ। বৃহস্পতিবার পূর্ববর্ধমানের শক্তিগড় এলাকার চারটি ইটভাটার পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানো হল। ইট ভাটার মালিক, শক্তিগড় থানার পুলিশ ও ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের সহযোগিতায় পরিযায়ী শ্রমিক পরিবারগুলি নিজেদের বাড়ি ফিরে গেল । ফি বছর বিভিন্ন ইটভাটায় পরিযায়ী শ্রমিকরা আসেন দুর্গাপুজোর আগে কিংবা পরে। ইট ভাটার ইট তৈরির মরশুম শেষে বৈশাখ জ্যৈষ্ঠ মাসে তাঁরা বাড়ি ফিরে যান। এটাই প্রতিবছর হয়। কিন্তু এবার সব কিছু বদলে গেছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত গোটা বিশ্ব।লকডাউন চলছে পৃথিবীর বেশীর ভাগ দেশেই। ইটভাটার শ্রমিকরা মাস ছ’য়েক ধরে পরিবার নিয়ে ভাটা মালিকের আস্তানায় বাস করেন । ইট ভাটার বিভিন্ন বিভাগে কাজ করেন তাঁরা। বাঁকিদার, রেজা, পাতেরা, ফায়ার ম্যান ও লোডার পুরুষ ও মহিলা শ্রমিক সকলেই ভাটায় এক সঙ্গে কাজ করেন। কাজ নেই তবু বাড়ি ফিরতে না পারায় ভীষণ সমস্যায় পড়েন ইট ভাটায় কাজ করা ভিন জেলার পরিযায়ী শ্রমিকরা।
জেলা ও রাজ্যের বাইরের যাওয়া বন্ধ হওয়ায় মালিক পক্ষ ইটভাটার শ্রমিকদের রীতিমতো রেশনের ব্যবস্থা করেন। সেই ভাবেই এতদিন চলছিল। প্রশাসনের নির্দেশে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার উদ্যোগ শুরু হয় দিন কয়েক আগে। এদিন সকাল থেকে ইটভাটার শ্রমিক পরিবারগুলি শক্তিগড় বিডিও অফিসের পাশে উৎসব ময়দানে হাজির হয়। শুরু হয় তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা। তাঁরা কেউ যাবেন বীরভূম ও পুরুলিয়া। আবার কেউ যাবেন দক্ষিণ দিনাজপুর। ১৫০ জন পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে গন্তব্যে রওনা হয় চারটি লাক্সারী বাস। বাস চলতেই বাড়ি ফেরার আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। বর্ধমান সদর ব্রিক ফিল্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আরসাদ হোসেন জানান, লকডাউনের ফলে ইটভাটা বন্ধ ছিল, তখন মালিক পক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে। এদিন প্রশাসনের সহযোগিতায় মালিক পক্ষ বাস ভাড়া করে শ্রমিকদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করে।