জেলা

উমপুনে লণ্ডভণ্ড পূর্বস্থলীর আমবাগান, দিশাহারা আমচাষিরা

সুপার সাইক্লোন উম-পুনের দাপটে পূর্বস্থলীর অধিকাংশ আমবাগান লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকার আম গাছ থেকে ঝরে পড়ায় আমচাষিরা প্রচুর আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার পূর্বস্থলীর পাইকারি বাজারগুলিতে ঝরে পড়া আম ৩-৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। বহু বাগানের আম অবিক্রিত অবস্থায় আছে। বিগত ত্রিশ বছরের মধ্যে এমন ক্ষতি হয়নি বলে স্থানীয় আমচাষিদের দাবি। পূর্ব বর্ধমান জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু ঘোড়ুই বলেন, ঝড়ে আমের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে।

পূর্বস্থলীর বড় বাগানের আমচাষি কচি দফাদার বলেন, আমার বাগানের ৭০ শতাংশ আম ঝরে গিয়েছে। প্রচুর টাকার ক্ষতি হয়ে গেল। বিশ্বরম্ভার আমচাষি অজিত রায় বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ঝড়ের তীব্রতা বেশি ছিল। ৩টি গাছ ভেঙেছে। বাকি গাছগুলির বেশিরভাগ আম ঝরে গিয়েছে। কাঁলেখাতলার পাইকারি বাজারে ওই আমের দাম নেই। ২-৩ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়েছে।

পূর্বস্থলীতে গত বছরের তুলনায় এবার আমের ফলন কম হয়েছে। তবে কিছু কিছু বাগানে এবার আমের ফলন ভালো। পলাশপুলি, বেলগাছি, জাহান্নগর, চুপি, পূর্বস্থলী, বিশ্বরম্ভা, শ্রীরামপুরের বেশকিছু বাগানে প্রচুর আম হয়েছে। সপ্তাহ খানেক ধরে জাগ দেওয়া বোম্বাই প্রজাতির পাওয়া যাচ্ছিল স্থানীয় বাজারে। মরশুমের প্রথমে ভালোই দাম পাচ্ছিলেন চাষিরা। কয়েকদিনের মধ্যে হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোলাপখাস, মিঠুয়া প্রভৃতি প্রজাতির আম ভাঙা শুরু হতো। কিন্তু তার আগেই বিধ্বংসী উম-পুন সব কেড়ে নিয়েছে। এদিন সকালে বিভিন্ন বাগানে গিয়ে দেখা যায়, মাটিতে বিছিয়ে পড়ে রয়েছে আম। ঝরে পড়ে ফেটে যাওয়া আম কেউ কিনতে চাইছে না। পাইকারি বাজারে নিয়ে যেতে ৫০০ টাকা গাড়ি ভাড়া দিতে হবে। তার উপর আড়তদারকে টাকা দিতে হয়। সব মিলিয়ে কত টাকা চাষিরা পাবেন সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না চাষিরা। শ্রমিকদের মজুরি মেটাব কী করে বুঝতে পারছি না।
পূর্ব বর্ধমান জেলার সেরা সুস্বাদু আম হিসেবে পরিচিত পূর্বস্থলীর হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোলাপখাস, মিঠুয়া, প্রজাতির আম। উপ-পুনের প্রভাবে কার্যত দিশাহারা আমচাষিরা।

Loading

Leave a Reply