উম-পুন সাইক্লোনের প্রভাবে বহু জমির সব্জি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চাষিদের মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে। তার জেরে পূর্বস্থলীর বিভিন্ন পাইকারি বাজারে শাক-সব্জির দর ক্রমশ চড়তে শুরু করেছে। আড়তদারদের দাবি, গত কয়েকদিনে শাক-সব্জির দাম দেড় গুণ বেড়ে গিয়েছে। এমনকী কয়েকদিনের মধ্যে তা আরও পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা। সোমবার কাঁলেখাতলার সব্জি আড়তগুলিতে কুইন্টাল প্রতি পটল বিক্রি হয় ১৫০০ টাকা দরে। রবিবার তা ছিল ১১০০ টাকা। এক লাফে ৪০০ টাকা বেড়েছে পটল। এছাড়া এদিন করলা বিক্রি হয় ১৪০০ টাকা দরে। রবিবার তার দাম ছিল ৮০০ টাকা।
জানা গিয়েছে, উম-পুনের প্রভাবে শাক-সব্জির প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। মাঠে সব্জির পরিমাণ কম রয়েছে। যার জেরে আড়তেও সব্জির আমদানি কম হচ্ছে। এদিন কুইন্টাল প্রতি নতুন কচুর দাম ২৫০০ টাকা, ঝিঙে ১৫০০ টাকা, ভালো বেগুন ২০০০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ১০০০ টাকা কুইন্টাল দরে বিক্রি হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে সব্জির দাম আরও বাড়বে বলে মনে হয়। বর্ধমান জেলায় সব থেকে বেশি শাক-সব্জির চাষ হয় পূর্বস্থলী-২ ব্লকে। লকডাউনের মধ্যেও এবছর সব্জির প্রচুর ফলন হয়েছিল। মেড়তলা, ফলেয়া, আটপাড়া, বিশ্বরম্বা, স্বরডাঙা, কাঁলেখাতলা, দুবরাজপুর প্রভৃতি মৌজায় এবার সব্জির ফলন ছিল চোখে পড়ার মতো। লকডাউন শুরু হওয়ার ফলে চাষিরা সব্জির দাম পাচ্ছিলেন না। অবিক্রিত শাক-সব্জি ফেলে দিতে হচ্ছিল। বাইরের ক্রেতারা পূর্বস্থলীতে আসতে পারছিলেন না। সপ্তাহ খানেক ধরে অবশ্য লকডাউন কিছুটা শিথিল হওয়ায় সব্জি রপ্তানির গাড়ির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। চাষিরা সবে আশার আলো দেখতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু কয়েকদিন আগে উম-পুন সুপার সাইক্লোন শাক-সব্জির খেত লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছে। অনেক চাষি কান্নায় ভেঙে পড়েন। একে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে লকডাউন চলায় জমিতে কাজের জন্য খেতমজুর মিলছে না। তার উপর উম-পুনের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হন চাষিরা।
পূর্বস্থলী-২ ব্লকের ৩ জায়গায় পাইকারি সব্জি আড়ত আছে। এসটিকেকে রোডের পাশে কাঁলেখাতলা বাজার ও পারুলিয়ার সব্জির আড়তে প্রচুর মানুষ সব্জি কিনতে আসেন। আরও একটি আড়ত রয়েছে ফলেয়া হল্ট স্টেশনের পাশে। রেল ও সড়কপথে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন বাজারে পৌঁছে যায় পূর্বস্থলীর তাজা শাক সব্জি। চাহিদা বেড়ে যাওয়ার ফলে এখন দাম বাড়তে শুরু করেছে।