সকলের তরে সকলে আমরা। প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। অর্থাৎ প্রত্যেকেই আত্মস্বার্থ বিসর্জন দিয়ে পরের কল্যাণে নিযুক্ত থাকা মানবচিত কর্তব্য। “আমি সুস্থ তো জগৎ সুস্থ “। ১৩০কোটি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এমনই বার্তা দিলেন। তিনি বলেন, এখন যা পরিস্থিতি এই পরিস্থিতিতে নিজে সুস্থ থাকার সাথে সাথে প্রত্যেককে সুস্থ রাখাও আমাদের কর্তব্য। এমনকী নিজে সুস্থ থাকলে পরিবারের সকলে সুস্থ থাকবে। তার কারণ করোনা এমন একটি জীবাণু যা এক ব্যক্তির থেকে আর এক ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করে। তাই আমি যদি সুস্থ থাকি পরিবারের সকলে সুস্থ থাকবে। তিনি বলেন আপনি বাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, করোনাকে এড়িয়ে চলছেন। প্রশাসনের কোনও কথায় কর্ণপাত করছেন না।
তবে আপনার সাথে আপনার প্রিয়জনদের ক্ষতি। কিছু সপ্তাহ ভীষণ দরকার না হলে বাইরে বেরবেন না। অফিসের কাজ যতটা সম্ভব বাড়িতেই করুন। জনপ্রতিনিধি, মিডিয়াকর্মী, হসপিটালে কর্তব্যরত ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, যাদেরকে সমাজের জন্য বাইরে বের হতেই হবে তারা ছাড়া বাকিরা বাড়ির মধ্যেই থাকুন। ভিড় থেকে দূরে থাকুন। বিশেষ কোনও কাজ না থাকলে বাইরে বেরবেন না। তিনি বিশেষ করে ৬০ থেকে ৬৫ বছরের বেশি বয়সি পরিবারের সদস্যদেরকে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। উল্লেখ্য ভারতবর্ষে এখন পর্যন্ত যে চারজনের মৃত্যু ঘটেছে তারা প্রত্যেকেই ষাটোর্ধ্ব এবং বিশ্বের ষাটোর্ধ্ব মানুষের মৃত্যুর সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। তিনি রবিবার জনতা কারফিউয়ের উপদেশ দিয়েছেন। উল্লেখ্য ভারতবর্ষ বর্তমানে যে পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আছে তাতে করে যেকোনও সময় আমেরিকার মতো কারফিউ জারি হতে পারে। তাই প্রত্যেককে প্রস্তুত হওয়ার কারণে ২২ শে মার্চ রবিবার সকাল ৭ টা থেকে রাত 9 টা পর্যন্ত ভারতবর্ষের প্রত্যেকটি জায়গায় মানুষকে একত্রিত হয়ে কারফিউ এ অংশগ্রহণ করতে বলছেন।
এমনকী প্রতিটি রাজ্যের মন্ত্রী আমলাদের দল-মত-নির্বিশেষে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসার জন্য আবেদন জানিয়েছেন। দেশ একত্রিত হওয়ার সংকল্প নিতে বলছেন। বর্তমানে যে পরিস্থিতি আসছে তার জন্য প্রস্তুত হন। এমনকী প্রতিটি ব্যক্তি ১০ জনকে ফোন করে করোনা সম্পর্কে সচেতন করুন। এতে করে আপনার সাথে প্রত্যেকেরই ভালো হবে। প্রত্যেকে একজন অপরজনের সেবা করুন। ২২ শে মার্চ রবিবার সন্ধ্যা ৫ টা নাগাদ ৫ মিনিট বাড়ির মধ্যে থাকা জানালা এবং বারান্দায় দাঁড়িয়ে সাইরেন বাজাতে বলেন। এই সাইরেন হিসেবে করতালি দিন, থালা বাজান, ঘণ্টা বাজান। এতে করে প্রত্যেকে প্রত্যেককে কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করুন। সেবা হলো পরম ধর্ম প্রত্যেকে এই বার্তা পৌঁছে দিন। সাধারণ মানুষ এবং ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, অহেতুক ডাক্তারখানায় গিয়ে ভিড় করবেন না। রুটিন চেকআপের জন্য ডাক্তারখানায় যাবেন না। অল্প কোনও সমস্যা হলে পারিবারিক ডাক্তারের সাথে ফোন করে যোগাযোগ করে ফেলুন। ডাক্তারদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন জরুরি অস্ত্রোপচার ছাড়া সমস্ত অস্ত্রোপচার কিছুদিন পরে করুন। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট মালিকদেরকে বলেন, ভীষণ দরকার ছাড়া বাস গাড়ি কম বের করুন।
সমস্ত নিম্নবিত্ত, গরিব, মধ্যবিত্ত, ধনী লোক প্রত্যেকে প্রত্যেককে সাহায্য করুন। এই পরিস্থিতিতে সমগ্র বিশ্বের সাথে ভারতের অর্থনীতির অবস্থা খারাপ হচ্ছে। সামর্থ্য অনুযায়ী সংবেদনার সাথে একে অপরকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন। আপনার বাড়িতে যে কাজ করে, প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে মালিকদেরকে তিনি বলেন, এই পরিস্থিতিতে ছুটি দিলে কোনও মাইনে কাটবেন না। কারণ উনি আপনার পরিবার চালান। দুধ, খাবার, ওষুধ এইসব অতিরিক্ত পরিমাণে তুলে নেবেন না। যতটুকু দরকার ততটুকুই তুলুন। প্যানিক বন্ধ করুন। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে কোনও দেশ কোনও দেশকে সাহায্য করতে পারবে না। মানবজাতি বিজয়ী হোক, দেশ বিজয়ী হোক। তিনি আরও বলেন, সামনেই নবরাত্রি, শক্তির উপাসনা ভারতবর্ষের সব শক্তি দিয়ে একসাথে আগে চলুক।