২০০০ সালের বন্যা। ভয়ঙ্কর দুর্ভোগের পড়েছিলেন চাপড়ার মানুষ। কলার ভেলায় চড়ে সেই অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। বন্যা কবলিত এলাকায় গিয়ে তাদের চিকিতসা করেছেন। তিনি তৎকালীন চাপ পড়ার নিয়ম সুবোধ মণ্ডল। চাপড়ায় ১৪ বছর সুনামের সঙ্গে বিএমওএইচের দায়িত্ব সামলেছেন। ঝাড়গ্রামে বদলির পর গত ছ’মাস করোনার বিরুদ্ধে সামনে থেকে লড়াই করেছেন। সেই করোনার কাছেই হার মেনেছেন।
সোমবার কলকাতার বেসরকারি নার্সিংহোমে মৃত্যু হয়েছে ঝাড়গ্রামের ডেপুটি সিএমওএইচ(২) সুবোধ মণ্ডলের(৫৬)। বদলি হয়ে চলে যাওয়ার পরেও চাপড়ার মানুষ তাঁকে ভোলেনি। তাঁর প্রতি সম্মান জানাতে চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতাল চত্বরে নবনির্মিত পার্কের নামকরণ করা হল ‘ডাঃ সুবোধ মণ্ডল স্মৃতি শিশু উদ্যান’। সুবোধবাবুর বাড়ি নদীয়ার হাঁসখালি থানার বগুলায়। তাঁর কিডনির সমস্যা ছিল। ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটিতে প্রতি সপ্তাহে ডায়ালিসিস করাতেন তিনি। এছাড়াও হার্টের সমস্যা ছিল। ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ডায়ালিসিস ইউনিটের দু’জন টেকনিশিয়ান কিছুদিন আগে করোনা আক্রান্ত হন। গত ২৬ আগস্ট তিনি ডায়ালিসিস করাতে এসেছিলেন। র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় তাঁর করোনা পজ়িটিভ ধরা পড়ে। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে সোমবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়।
চাপড়ার বিডিও অনিমেষকান্তি মান্না বলেন, সুবোধবাবু একজন করোনা যোদ্ধা। আমরা তাঁকে হারিয়েছি। উনি ১৯৯৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই ব্লকের বিএমওএইচ ছিলেন। বর্তমান বিএমওএইচের সঙ্গে কথা বলে আমরা তাঁর নামে নবনির্মিত পার্কের নামকরণ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছি। তাঁর লড়াইয়ের কথা সবাই স্মরণ করবে। ওঁর কাজের মধ্যে দিয়েই উনি বেঁচে থাকবেন। চাপড়ায় সুবোধবাবু ‘ডাক্তার মণ্ডল’ নামে বেশি পরিচিত ছিলেন। প্রশাসক হিসেবে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। সময় পেলেই গ্রামের সাধারণ মানুষের চিকিৎসা করতেন। ২০০০ সালের বন্যায় তাঁর উল্লেখযোগ্য কাজ আজও চাপড়াবাসীর মুখে মুখে ফেরে। সুবোধবাবুর মৃত্যুর খবরে তাই মন ভার সকলের।