‘নিউ নরমাল’এ পড়াশোনার একমাত্র মাধ্যম ভার্চুয়াল। স্কুল-কলেজের শিক্ষা থেকে টিউশন এমনকী পরীক্ষাও চলছে ভার্চুয়াল মাধ্যমেই। কিন্তু ঘরে বসে এই পরিস্থিতির সাথে যুঝতে হলে আবশ্যিক অ্যান্ড্রয়েড ফোন। কিন্তু আরামবাগ মহকুমার প্রত্যন্ত ব্লক গোঘাট। সেখানকার পড়ুয়াদের বেশিরভাগ অভিভাবকেরই রোজগার বলতে মঠে চাষ করা কিংবা দিনমজুর। তাই তাদের কাছে অ্যান্ড্রয়েড ফোন মানে ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখার মতোই। তাই অ্যান্ড্রয়েড ফোনের অভাবে করোনার থাবায় বন্ধ হতে বসেছে তাদের পড়াশোনা। কারন স্মার্টফোন কেনা তাদের পরিবারের সামর্থের বাইরে । তাই সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে অ্যান্ড্রয়েড ফোন চেয়ে চিঠি লিখল গোঘাটের গ্রামীণ এলাকার দুই শতাধিক পড়ুয়া। আর এই বিষইয়ে পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় গোঘাট ১ ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদ।
জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। চলছে ভার্চুয়াল পঠন-পাঠন। গোঘাটের প্রত্যন্ত এলাকাতে ইন্টারনেটের উপযুক্ত পরিষেবা থাকে না। আর এরফলে সমস্যায় পড়ছে ছাত্র-ছাত্রীরা। একই সাথে দুস্থ ছাত্র-ছাত্রীর পরিবারের লোকজন তাদের ছেলেমেয়েদের স্মার্টফোন কিনে কিনে দিতে পারে না। এরফলে দুস্থ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা অনেকটাই বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই এদিন ছাত্রছাত্রীরা বাধ্য হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফোনের জন্য দরবার করেছে। বুধবার এক জায়গায় বসে এলাকার শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে এই দাবি জানালেন। ই-মেল মারফত ২০১ জন ও পোস্টকার্ড মারফত ৪৯ এই দাবি জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ছাড়াও বেশ কয়েকটি উচ্চবিভাগে এই বিষয়ে দরবার করেছে পড়ুয়ারা।
পায়েল চক্রবর্তী নামে এক কলেজ পড়ুয়া বলেন, সরকার যদি বিষয়টি দেখে তাহলে তার মতো বহু ছাত্রছাত্রী উপকৃত হবে। তাই আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করেছি। তাদের কথা ভেবে প্রধানমন্ত্রীর সদর্থক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এ বিষয়ে তৃণমূল ছাত্রনেতা সৈয়দ আসিক হোসেন জানান, অনেক সময় দেখা যায় দুস্থ ছাত্র-ছাত্রীরাই মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক সহ কলেজে স্নাতকোত্তর পরীক্ষা বিশেষ নজরকাড়ে। কিন্তু বর্তমানে এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল পঠন-পাঠনে সেই দুঃস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের অনেকটাই পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে। তাই প্রধানমন্ত্রী যাতে ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানোর চিন্তাভাবনা নেন তার জন্যই এই উদ্যোগ।
এমনিতেই প্রধানমন্ত্রী যত দিন যাচ্ছে তত রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি বিক্রি করে চলছেন। আর তার দলের নেতারা সেই টাকা আত্মসাৎ করছে। তাই সমস্ত বিষয়টি যাতে প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে সেই লক্ষ্যেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেহেতু এই পরিস্থিতি বেশ জমায়েত করা যায়নি তাই আনুষ্ঠানিকভাবে এদিন শুরু করা হল। আগামীদিনে প্রতিটি অঞ্চলে ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বরা পড়ুয়াদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে এই কর্মসূচি করবে। এখন দেখার ছাত্র-ছাত্রীদের এই আবেদনে কতদ্রুত সাড়া দেয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। নাকি এক্ষেত্রেও রাজনীতি জারি থাকে সেটা সময়ই জবাব দেবে।