জেলা রাজ্য

কালোবাজারির ঠেলায় চোলাই-ই ভরসা সুরাপ্রেমীদের

দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো। বাংলায় এই প্রবাদ এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন মদ্যপ্রেমিরা। এতদিন যারা ফরেন লিকার খেতেন এই লকডাউনের বাজারে তারাই চোলাইয়ের সঙ্গে সিএস মিশিয়ে খাচ্ছেন। আর তার ফলেই ফরেন লিকারের পাশাপাশি চোলাইয়ের কালোবাজারি শুরু হয়েছে মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে, এমনটাই অভিযোগ। পাশাপাশি আরও অভিযোগ এই মুহূর্তে মদের দাম আকাশছোঁয়া। যে যেমন দামে পারছে মদের কালোবাজারী করছে। এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে গ্রামের মানুষও। অভিযোগ গোঘাট, আরামবাগ খানাকুল, পুড়শুরার বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ করেই চোলাই মদের রমরমা দেখা দিয়েছে। গোঘাটের মথুরা সহ কুমুড়সা পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রাম থেকে মদ তৈরি ও বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। একইভাবে খানাকুল আরামবাগের বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে মদের ভাটি তৈরীর অভিযোগ উঠছে।



সবথেকে ভয়ঙ্কর অভিযোগ এলাকার বেশকিছু গৃহবধূ করেছেন। তারা বলছেন বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণ শিবিরে সারাদিন বাড়ির পুরুষরা যোগ দিয়ে সেখান থেকে পাওয়া জিনিসপত্রের বেশ কিছুটা বিক্রি করে দিচ্ছে, বিক্রি করে যে পয়সা পাচ্ছে সেই পয়সায় মদ গিলে বাড়ি ফিরছে। বাড়িতে এসে এই দুঃসহ পরিস্থিতিতে নানান ঝামেলা বাধাচ্ছে। বাড়িতে তৈরি হচ্ছে অশান্তি। তারা অসহায় হয়ে পড়ছে। কেমন ভাবে চলছে এই চোলাইয়ের কারবার? কিভাবেই বা কালোবাজারিরা এর সুযোগ গ্রহণ করছে তা জানতেই আজ বাংলার প্রতিনিধি হানা দিয়েছিল মথুরা এলাকায়। এখানে ফাঁকা মাঠে দেখা গেল এক মদ্যপ আপন খেয়ালে গান গাইছে। পাশে তার পলিথিনের একাধিক প্যাকেট। এই প্যাকেটই নাকি চলে মদ বিক্রি।




১০ টাকা মূল্যের চোলাইের দাম এখন নাকি ২৫ টাকা। সিএস বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। আর বিলাতি মদের দাম তো আকাশছোঁয়া। এক নিমেষে কোথায় কোথায় মদ পাওয়া যাচ্ছে তার তালিকা দিচ্ছে মদ্যপরা। কোন এলাকায় মদের দাম কেমন, মদের কোয়ালিটি কেমন তাও তাদের কণ্ঠস্থ। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে লকডাউনের বাজারে কিভাবে মদ তৈরি হচ্ছে? কোথা থেকেই বা পাওয়া যাচ্ছে মদ তৈরির কাঁচামাল? এলাকার স্থানীয়রা বলছেন লুকিয়ে চুরিয়ে একআধজন আগে মদ তৈরি করলেও এই লকডাউনের পর থেকে মদ তৈরি বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। যারা দীর্ঘদিন ধরেই মদ তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিল না তারাও নতুন করে ব্যবসা ফেঁদে ফেলেছে আর এলাকায় মদ কিনতে নানান বহিরাগত মানুষ এসে ভিড় জমাচ্ছে। মাঝেমধ্যেই আবগারি দপ্তরের লোকজন এসে হানা দিলেও আবার কিছুক্ষণ পরে পরিস্থিতি একইরকম হয়ে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে এদের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ।




Loading

Leave a Reply