বিশ্বজুড়ে করোনা বুঝিয়ে দিয়েছে মানুষ প্রকৃতির কাছে বড় অসহায়। যদিও এখনও বিষয়টি বুঝতে চাইছে না একশ্রেণীর মানুষ। এই পরিস্থিতিতেও এক নৃশংস পশুহত্যার সাক্ষী রইল গোটা দেশ। অন্তঃসত্ত্বা এক হাতিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হল কেরলের মালপ্পুরম জেলায়। একটি বাজি ভরা আনারস খাইয়ে হত্যা করা হল হাতিটিকে। আনারসটি খাওয়ার পরই তার মুখের মধ্যে ফেটে গিয়ে মর্মান্তিকভাবে মারা যায় এই বৃহৎ প্রাণীটি। এমনই অভিযোগ উঠল স্থানীয় জনতার দিকে। সম্প্রতি উত্তর কেরলের মালাপ্পুরমের এক বন বিভাগের আধিকারিক সোশ্যাল মিডিয়ায় এই হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ দেওয়ার পরে শিউরে ওঠে গোটা দেশ। জানা গিয়েছে, বনাঞ্চালে খাবারের অভাবে ওই অন্তঃসত্ত্বা হাতিটি লোকালয়ে চলে আসে। নিজের খেয়ালে খাবারের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছিল মালপ্পুরমের গ্রামে-গ্রামে। অথচ ক্ষুধার্ত হাতিটিকে দেখে কেউ খেতে তো দেয়নি, উল্টে তাকে মেরে ফেলার ফন্দি আঁটে। হাতিটি কারও কোনও ক্ষতি করেনি।
শুধু নিজের মতোই খাবার খুঁজে বেড়াচ্ছিল সে। কিন্তু লোকালয়ে ঢুকে পড়াটাই কাল হল তার। গ্রামবাসীরা একটি আনারসে বাজি ভরে খেতে দেয় তাকে। কিছু না বুঝেই হাতিটি সেটি খেয়েও ফেলে। তাতেই সব শেষ। আনারসটি গলায় পৌঁছাতেই ফাটতে থাকে। বিস্ফোরণটি এতটাই তীব্র ছিল যে, হাতিটির জিভ ও মুখ ভয়ঙ্কর ভাবে পুড়ে যায়। যন্ত্রণায় হাতিটি গ্রামের পথে পথে ছুটতে থাকে। যদিও মানুষের এই নৃশংস ব্যবহারের পরেও হাতিটি গ্রামের কারও কোনও ক্ষতি করেনি। ওই অবস্থাতেও কাউকে সে আক্রমণও করেনি। শরীরের জ্বালা মেটাতে নেমে যায় একটি নদীতে। প্রায় চার ঘণ্টা জলে দাঁড়িয়ে শরীর ঠান্ডা করার চেষ্টা করলেও শেষরক্ষা হয়নি। মৃত্যু হয় হাতিটির। ততক্ষণে বন দপ্তরের কর্মীরা এসে অনেক চেষ্টা করলেও বাঁচাতে পারেনি হাতিটিকে। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছে গোটা দেশ।