জন্মদিনেই মর্মান্তিক পরিণতি যুবকের। বাড়িতে মায়ের তৈরি পায়েস ও মিষ্টি খাবার পর বাড়ি থেকে উদ্ধার হল যুবকের মৃতদেহ। ঘটনায় স্তব্ধ এলাকা। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে খানাকুলের নরেন্দ্রপুর এলাকায়। মৃত যুবকের নাম প্রসেনজিৎ মান্না। ঘটনার জেরে শোকের ছায়া এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রসেনজিৎ মান্না কলকাতার বেহালায় একটি সেলুন দোকানে কাজ করত। বাবা রবীন মান্না হাওড়ায় একটি লোহার দোকানে কাজ করতেন। মা সুমিত্রাদেবী সাধারণ গৃহবধু। অভাবের সংসার তাই সুমিত্রাদেবী স্থানীয় মানুষদের বাড়িতে কাজ করে সংসার চালাতেন। শুক্রবার ছিল প্রসেনজিতের জন্মদিন। সোমবার সে কলকাতা থেকে তার নিজের বাড়ি খানাকুলে আসে। জন্মদিন বলে কথা। মা বাবার একমাত্র আদরের ছেলে প্রসেনজিৎ। স্বাভাবিকভাবেই ঘোরোয়া জাঁকজমকপূর্ণভাবে জন্মদিনের আয়োজন করা হয়েছিল। দুপুরে মায়ের হাতের তৈরি পাঁচ ধরনের খাবার ও পায়েস দিয়ে খেয়েছিল প্রসেনজিৎ। বাবা-মা কেউই করতে টের পারেননি এই রান্না ছেলের শেষ খাওয়া হবে তাদের।
প্রতিদিনের মত এদিন বিকালে মা সুমিত্রা দেবী স্থানীয় মানুষদের বাড়িতে কাজে গিয়েছিলেন। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে কাজে লাগিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হল প্রসেনজিৎ। বাড়ির বাইরের কাজ সেরে এসে মা সুমিত্রাদেবী ছেলেকে ডাকাডাকি করতে শুরু করেন সন্ধ্যের খাবার দেবে বলে। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। নিজের বাড়ি থেকেই জন্মদিনে ছেলেকে ঝুলতে দেখল মা।
আর তা দেখেই হাতপা ঠান্ডা হয়ে গেছিল মায়ের। শুরু হয় কান্না। মায়ের কান্না শুনে পড়শীরা ছুটে এসে, দেখেন নিজের বাড়িতেই ঝুলছে প্রসেনজিৎ। তাকে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ততক্ষণে সবশেষ। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা প্রসেনজিৎকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মুহূর্তের মধ্যে স্তব্ধ হয়ে যায় এলাকা। কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে স্থানীয় মানুষরা।
প্রসেনজিতের এই চরম সিদ্ধান্তের পেছনে কি অন্য কোনও রহস্য রয়েছে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান স্থানীয় মানুষ থেকে শুরু করে পরিবারের সদস্যরা।