রাশি রাশি মিষ্টির পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে সেই মিষ্টি অবশ্য পেল্লাই সাইজের। এক একটি মিষ্টির ওজন পাঁচ কেজি পর্যন্ত। খাবার আগে যা দেখেই চোখ আটকে যাওয়ার জোগাড়। পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর রায় দোগাছিয়ার গোপীনাথের মিষ্টি মেলার অবশ্য এটাই রেওয়াজ৷ প্রতিবছরের মতো এবারও দেদার মিষ্টি বিকল মেলায়। তবে প্রত্যেক বছরই যেন মিষ্টির সাইজ আরও বাড়ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন।বাইরে থেকে অবশ্য মেলায় প্রথমবার কেউ গেলে অবাক চোখে দেখতে হবে এইসব বিশাল সাইজের মিষ্টি। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য এতে অবাক হন না। কারণ প্রতিবছর মিষ্টির সাইস যত বাড়ছে ততই বিক্রিবাটাও বাড়ছে এই মেলায়। কথিত আছে গোপীনাথের দোল প্রায় ৫৩০ বছরের পুরনো। রাই দোগাছিয়ার রায়চৌধুরী পরিবারের কুলদেবতা মদনমোহন। পারিবারিক উৎসব হলেও পরে তা সার্বজনীন রূপ পায়।
গোপীনাথকে ঘিরে বসে বিশাল মেলা। পাঁচদিনের উৎসব দোলের আগের দিন থেকে শুরু হয়। উৎসবের মূল অনুষঙ্গ অবশ্য বিশাল সাইজের রসগোল্লা, ল্যাংচা সহ বিভিন্ন মিষ্টি। মিষ্টি মেলাতে ছুটে আসেন খাদ্যরসিকরা। মিষ্টির এই বিশাল আকৃতি স্বাভাবিকভাবেই শিশুদের আকর্ষিত করে তোলে। মিষ্টির দোকানের মধ্যে কড়াই ও ট্রেতে সাজানো থাকে এই পেল্লাই সাইজের রসগোল্লা, ল্যাংচা সহ বিভিন্ন মিষ্টি। এবার ৫ কেজি ওজনের রসগোল্লা বানিয়েছেন কারিগররা। সেই মিষ্টি ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রায় ৬ ঘন্টা ধরে দিয়ে এই মিষ্টি বানাতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা। বংশপরম্পরায় এই মেলাতে আসছেন মিষ্টি বিক্রেতা। তবে এই মিষ্টি মেলার পিছনে রয়েছে ইতিহাস। এক সময় এই এলাকায় বেশকিছু বনেদি পরিবার বাস করত। তারা আভিজাত্যের প্রমাণ দিতেই কে কত বড় সাইজের মিষ্টি কিনতে পারে তা নিয়ে একটা ছায়াযুদ্ধ চলত নিজেদের মধ্যে। আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগাতেন মেলায় আসা ব্যবসায়ীরা। এভাবেই ধীরে ধীরে এই মেলায় মিষ্টির সাইজ বড় হয়েছে।