ফুটবলের রাজপুত্র আর নেই ৷ নিজের বাড়িতেই বুধবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা ৷ নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের ৮ দিন পরে তাঁকে বুয়েনস আয়ার্সের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এক ক্লিনিকে। সেখানে তাঁর অ্যালকোহল আসক্তি দূর করার চিকিৎসা চলছিল। মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ায় মারাদোনাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে জরুরি ভিত্তিতে অস্ত্রোপচার হয়েছিল তাঁর। গত ১১ নভেম্বর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে। কিন্তু বাড়িতে এসেও খুব বেশিদিন বাঁচতে পারলেন না ৷ বুধবার তাঁর মৃত্যুসংবাদে গোটা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীরা কাঁদছেন ৷ চলতি বছরে আরও একটা দুঃসংবাদ ৷
হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময়েই মারাদোনার আইনজীবী জানিয়েছিলেন জীবনের অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন দিয়েগো ৷ মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধায় প্রাণ হারানোর আশঙ্কা ছিলই ৷ সে যাত্রায় বেঁচে গেলেও খুব বেশিদিন আর বাঁচতে পারলেন না ৷ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার দু’সপ্তাহের মধ্যেই চিরনিদ্রায় মারাদোনা ৷ অথচ মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচারের পরে দিয়েগো মারাদোনা দ্রুত সুস্থ হচ্ছেন বলেই জানা গিয়েছিল। এমনকি, একসময়ে তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন তাঁর ব্যক্তিগত ডাক্তার। পরিস্থিতি দ্রুত বদলে যায়। জটিলতা তৈরি হওয়ায় তাঁকে আরও কিছু দিন বুয়েনস আয়ার্সের ক্লিনিকে থাকতে হয় মারাদোনাকে ৷
চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, অস্ত্রোপচারের পরে দিয়েগোর বেশ কয়েক বার মাথা ঘুরে গিয়েছিল। এমন প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে তাঁর মাদকাসক্তির সম্পর্ক থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল। মারাদোনার ঘনিষ্ঠ কয়েক জনের বক্তব্য, কিংবদন্তি ফুটবলারের মদ্যপানের আসক্তি ছিল। তাও ডাক্তাররা হাল ছাড়েননি ৷ দিয়েগো চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনেই চলবে। এমনটাই ছিল তাঁদের বিশ্বাস ৷ সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট ভাল আসার পর চিকিৎসকরা আশ্বস্ত হয়েছিলেন, মারাদোনা দ্রুত সুস্থ হচ্ছেন ৷ এরপর মারাদোনার ইচ্ছামতোই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় ৷ কিন্তু তারপর আর বেশিদিন বাঁচানো সম্ভব হল না আর্জেন্টিনার ছিয়াশির বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ককে ৷