মিষ্টি ছাড়া পায়েসের মতো, ঝাঁঝালো গন্ধ ছাড়া পেঁয়াজ! এ কথা যেন ভাবাই যায় না। পেঁয়াজের গন্ধ নেই একথা কার্যত মানা যায় না। কয়েক মাস আগে থেকেই দেশে পেঁয়াজের আকাল ও তার ফলে গৃহস্থের এই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আনাজের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে যায়। সেই ঘাটতি মেটাতে কেন্দ্রীয় সরকার তুরস্ক ও মিশরের মতো দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করেছিল। কিন্তু ভারতীয়রা যে ধরনের পেঁয়াজ খেতে অভ্যস্ত, অর্থাৎ সেই ঝাঁঝালো স্বাদ ওই বিদেশি পেঁয়াজে খুব একটা নেই। আকারে বিদেশি পেঁয়াজ নাসিকের পেঁয়াজের চারগুণ বড়। কিন্তু গন্ধহীন পেঁয়াজ বেশিরভাগ রাজ্য নিতে চাইছে না বলে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অফিসাররা জানিয়েছেন। এই অবস্থায় গন্ধহীন ওই ৩৪ টন পেঁয়াজ ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র।
অর্থাৎ ওই পেঁয়াজ আমদানি করতে পরিবহণ খরচ সহ যত টাকা সরকারের ব্যয় হয়েছিল, তার অর্ধেকের কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি হতে চলেছে। প্রথমে সরকারের পরিকল্পনা ছিল আমদানি করা পেঁয়াজ ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হবে। সে ক্ষেত্রে লাভ-ক্ষতি কিছুই হতো না। কিন্তু প্রায় গন্ধহীন পেঁয়াজের চাহিদা না থাকায় কেন্দ্রীয় সরকার পরিকল্পনা বদলাতে বাধ্য হচ্ছে। আমদানি করা পেঁয়াজ বাংলাদেশ, শ্রীলংকা, নেপাল ও মালদ্বীপ এর মতো প্রতিবেশী দেশে রপ্তানি করার কথা ভাবছে ভারত। মিশর ও তুরস্ক থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে কলকাতায় এসে পৌঁছেছে। রাজ্য কৃষি বিপণন দপ্তর সূত্রে খবর ৫৯ টাকা কেজি দরে ওই পেঁয়াজ বিক্রি হয়ে গেছে। এরপর আরও ৬০ টন পেঁয়াজ এসে পৌঁছেছে এ রাজ্যে। ওই পেঁয়াজ সুফল বাংলা স্টল ও রেশন দোকানে ৫২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের আমদানি হওয়া পেঁয়াজ আজ থেকেই বিক্রি হবে। কৃষি বিপণন দপ্তর সূত্রে, বিদেশ আমদানি করা পেঁয়াজের এক একটির ওজন ২০০ থেকে আড়াইশো গ্রাম। তবে পেঁয়াজের ঝাঁজ না থাকায় বাঙালির হেঁশেলে তার চাহিদা ঠিক কতখানি হবে তা নিয়ে সন্দিহান রয়েছে রাজ্য।