রানার ছুটেছে ঝুম ঝুম ঘণ্টা বাজছে রাতে। মোবাইলের দৌলতে রানাররা ছুটি পেয়ে গেছে। মোবাইলের দৌলতে এখন প্রেম নিবেদন থেকে শুরু করে সমস্ত খবরা খবর এখন ফোনের মাধ্যমে সরবরাহ হয়ে যায়। তাই রানাররা এখন চাকরি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ছে। নতুন প্রজন্মের কাছে চিঠি একটা বিস্ময়ের বস্তু বটে। কিন্তু সেই পুরনো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনার জন্যই বর্ধমানের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চিঠির মাধ্যমে শুভেচ্ছা বার্তা প্রেরণ করছেন। মেমারির পাল্লারোডের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে ৩৩০ জন সদস্য আছেন। যারা পোস্টকার্ড বা ইনলান্ড লেটারে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাচ্ছেন। নিজেদের মধ্যে ৩৩০ জন সদস্য মিলে ২৫ ডিসেম্বরের আগে থেকেই শুরু করেছে এই শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য চিঠি লেখা।
প্রশাসনিক কর্তা ও পরিচিত মানুষদের মধ্যে ৪৫০ টি চিঠি বিনিময় করেছে তারা। প্রত্যেকের কাছেই অনুরোধ করেছেন, চিঠির বিনিময় চিঠি দেওয়ার জন্য এবং সেই চিঠি বয়ানের লেখা যাঁর ভালো হবে, তাঁকে পুরস্কৃত করবে বলেও জানিয়েছেন তারা। এছাড়া সংগঠনের তরফ থেকে সবুজায়নের জন্য একটি করে বীজ প্রদান করা হচ্ছে চিঠির সঙ্গে। সেই বীজকে রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে গাছে পরিণত করার জন্যও চিঠিতে আবেদন জানানো হচ্ছে। তাঁদের মূল উদ্দেশ্য হল, রানার যেন আবার ফিরে আসে। চিঠির মধ্য দিয়ে পুরনো ঐতিহ্য বহন করে যেতে চাইছেন তাঁরা। সংগঠনের তরফে সন্দীপন সরকার জানান, এই ভাবনার বেশ কয়েকটি সামাজিক দিক রয়েছে। চিঠি লেখার অভ্যাস ফেরানো, নতুন প্রজন্মের কাছে চিঠির গুরুত্ব তুলে ধরা এবং সবুজায়ন। মাত্র ৫০ পয়সায় একটি পোস্টকার্ড এতগুলি কাজ করছে। যা এসএমএসে সম্ভব নয়। অনেকের কাছ থেকেই পাল্টা চিঠির আশা করছেন তারা।
এই উদ্যোগের ভূয়শী প্রশংসা করেছেন ডাক বিভাগের বর্ধমান আর এম এস শাখার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক শ্যামাপ্রসাদ চৌধুরী। তিনি সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে চিঠি লেখা অনেকটাই কমে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এমন পরিকল্পনা প্রশংসার দাবি রাখে। চিঠির সঙ্গে জেলার গাছ মাস্টার হিসেবে পরিচিত পূর্বস্থলীর শিক্ষক অরূপ চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, সচেতনতা মানুষকে অনেকটাই এগিয়ে দিতে পারে। অনেকেই বলছেন এটি অত্যন্ত প্রশংসার যোগ্য। এক পক্ষে যেমন চিঠির আদান প্রদানের মধ্য দিয়ে সংস্কৃতি বজায় থাকে। তার সাথে সাথে গাছ লাগানোর মধ্য দিয়ে সবুজায়ন ঘটবে। এ ছাড়াও বর্তমানে বেশ কিছু পোস্ট অফিস বন্ধের জন্য অনেককেই চাকরি হারাতে হয়েছে। তাই প্রত্যেকের কাছে অনুরোধ আবার নতুন করে চিঠির লেখার জন্য এবং গাছের বীজ প্রদান করে প্রাণ বাঁচানোর পরিকল্পনা করার জন্য।