দিনটি ছিল ১৯৮৯ সালের ১ জানুয়ারি। গাজিয়াবাদ পুরসভা ভোট দোরগোড়ায়। ওই দিনটিতে সেখানকার সাহিদাবাদের ঝাণ্ডাবাদ গ্রামে পথনাটিকার ডাক এসেছিল ‘জনম’ ট্রুপের। ওই জনম ট্রুপের শ্রষ্ঠা ছিলেন বিখ্যাত লেখক তথা নাট্যকার সফদার হাশমি। তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যও ছিলেন। দিল্লির বাসিন্দা সফদার পথনাটিকার জন্য দেশজুড়ে পরিচিতি পেতে থাকেন। ওইদিন তাঁর ‘হল্লা বোল ‘ নাটকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছিল ঝাণ্ডাবাদে। নাটক চলাকালীন তাঁদের উপর আক্রমণ চালানোর অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। দুষ্কৃতীর হমলায় খুন হতে হয়েছিল ওই বিখ্যাত বাম নাট্যকারকে। ৪ জানুয়ারি তাঁর মৃত্যুর পর সফদারের স্ত্রী মলয়শ্রী হাশমি ওই অসম্পূর্ণ নাটকটি একই জায়গায় মঞ্চস্থ করেন। মোদির রাজ্য সফরে যেন সেই তিন দশকের ব্যবধান মুছে গেল। এযেন এত বছর পর হল রং মিলান্তি। মোদির বাংলা সফরের বিরোধিতায় রাস্তায় নামে বাম ও কংগ্রেসের ছাত্র যুব সংগঠন। সেই রং মিলান্তির আবহে এক পক্ষের স্লোগান মুখরিত হল অন্যপক্ষের কন্ঠে।
এদিন দেখা যায় সিপিএম সহ বাম ছাত্রদের বিক্ষোভের পাশে রাস্তায় গোল হয়ে বসে স্লোগান দিচ্ছে কংগ্রেসের যুব কর্মীরা। তাদের মুখেই শোনা গেল প্রখ্যাত সেই বাম নাট্যকার সফদার হাশমির হল্লা বোল স্লোগান। তিন দশকের ব্যবধান ঘুচিয়ে যুব কংগ্রেসের হাতিয়ার হল সেই হল্লা বোল স্লোগানই। যে নাট্যকারকে খুনের অভিযোগ রয়েছে কংগ্রেসের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। সেই নাট্যকারের স্লোগানকে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে বেছে নিল কংগ্রেস কর্মীরা। আজাদির তুমুল স্লোগানের মধ্যে নরেন্দ্র মোদির কুশপুতুল পুড়িয়ে এদিনের মতো প্রতিবাদ কর্মসূচি শেষ হলেও, রংমিলান্তির আবহে প্রকৃত ভাবেই যেন মিলে গেল বাম কংগ্রেসের রং। ফ্যাসিবাদের সামনে হয় আপস করো, নয় লড়াই করো। এই বিশ্বাসে ভর করেই প্রায় তিরিশ বছরের ব্যবধান ঘুচিয়ে বাম-কংগ্রেসের যৌথকন্ঠে উচ্চারিত হল ‘হল্লা বোল’।