একের পর এক রাজ্যে বিধানসভা ভোটে শোচনীয় পরাজয়ের পরে দলের ভিতরে প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল অমিত শাহের নেতৃত্ব নিয়ে। গত কয়েকটি নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে দলের মধ্যেই যেন চাণক্য তকমা চলেছিলেন বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেসের অন্যতম সংগঠক জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে দলে টেনে অমিত কি বুঝিয়ে দিলেন তিনি ফুরিয়ে যাননি। ভোপালের ভাবি মহারাজকে গেরুয়া শিবিরে শামিল করে তিনি এক ধাক্কায় দুটি মাস্টার স্ট্রোক দিলেন। পাশাপাশি ২২ কংগ্রেস বিধায়ককে একই দিনে ইস্তফা দেওয়ায় প্রদেশ কংগ্রেসের টালমাটাল অবস্থার নায়ক কিন্তু অমিত শাহই। এই ঘটনার পর বলতেই হয় আসলে জয় হয়েছে এক রাজনীতিকের। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে দলবদল এর এই খেলায় মূল্য পাচ্ছে কি মানুষের ভোট? রাজনীতিতে দলবদলের খেলা বহু পুরনো। কিন্তু পদের লোভে দলবদলের ট্রেন্ড এখন যেন বড্ড বেশি। কিন্তু এভাবে আর কতদিন।
মানুষের ভোটে এক দলের প্রতীকে জিতে অনায়াসে অন্যদলে যোগদানে কি মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের কোনও মূল্য থাকছে। তবে শুধু জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া নয় মহারাষ্ট্র নির্বাচনের পরও মানুষের ভোট নিয়ে প্রহসন চলেছে। একদলের হেভিওয়েট নেতাদের অন্যদলে যোগদানের পিছনে যার অবদান রয়েছে, তিনি অবশ্য নিজের দলের কাছে হিরো হচ্ছেন, তকমা পাচ্ছেন রাজনীতির চাণক্যের। কিন্তু মানুষের ভোট নিয়ে যে ছেলে খেলা হচ্ছে সেটা কি অসাংবিধানিক নয়?। এমন প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।
বিভিন্ন রাজ্যের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও একই ট্রেন্ড চলছে। একদলের বিদ্রোহী নেতাদের শিকার বানাচ্ছেন অন্যদলের মাথারা। রাতারাতি বদলে যাচ্ছে গদি। যদিও যাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের জেরে নেতারা জনপ্রতিনিধি হওয়ার ছাড়পত্র পেয়েছেন সেই মানুষের কোনও গুরুত্ব থাকছে না। এটা কি মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমান নয়? এইসব প্রশ্নের সমাধান কি আছে রাজনীতির কারবারিদের কাছে???