মায়ের মাথায় একের পর এক হাতুড়ির ঘা মারছেন পেশায় অধ্যাপিকা মেয়ে। গোটা ঘর ভেসে যাচ্ছে রক্তে। দরজার বাইরে থেকে এই দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেছিলেন নিরাপত্তারক্ষী ও প্রতিবেশীরা। কোনওরকমে দরজা ভেঙে মাকে উদ্ধার করেন মেয়ের হাত থেকে। গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন মা। পুলিশের নজর এড়িয়ে চম্পট দিয়েছেন মেয়ে। ঘটনাটি সল্টলেকের একটি অভিজাত আবাসনের। পুলিশ সূত্রে খবর, আবাসনে একাই থাকতেন অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার এস কে প্রতিহার। তাঁর স্ত্রী দীপালি ও মেয়ে ঋতুপর্ণা বেঙ্গালুরুতে থাকেন। সেখানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপিকার চাকরি করেন ঋতুপর্ণা। আবাসনের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ আগে মা-মেয়ে কলকাতায় ফেরেন। তারপরেই সেই ফ্ল্যাট ছেড়ে চলে যান প্রতিহার।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবারই বেঙ্গালুরুতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল দীপালি ও ঋতুপর্ণার। কিন্তু সকাল থেকেই তাঁদের মধ্যে বচসা বাধে। প্রতিবেশীরা চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পাচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পরেই দীপালিদেবীর আর্তনাদ শুনতে পান তাঁরা।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তারক্ষীকে দিয়ে কোল্যাপসিবল গেটের তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকেন তাঁরা। খবর দেওয়া হয় বিধাননগর দক্ষিণ থানায়। মাকে মারার পাশপাশি ফ্ল্যাটের ভিতরে কয়েকটি বাক্সে নাকি আগুনও ধরিয়ে দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা। গ্যাসও খোলা ছিল। যে কোনও মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত বলে জানিয়েছেন তাঁরা। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ এসে আটক করে ঋতুপর্ণাকে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় দীপালিদেবীকে। সেখানেই ভর্তি রয়েছেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, ঋতুপর্ণার কথায় অসঙ্গতি ধরা পড়ছিল। কেন তিনি মাকে আঘাত করেছেন, তার কোনও স্পষ্ট জবাব দিচ্ছিলেন না। মানসিকভাবে ঋতুপর্ণা সুস্থ কিনা তা জানার জন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখান থেকেই পুলিশকে এড়িয়ে চম্পট দেন তিনি। ঋতুপর্ণার খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ।