দেশ

বন্ধ হচ্ছে প্রকাশ্যে পশুবলি, নির্দেশ আদালতের

বহু মানুষ আছেন যারা মন্দিরে পশু বলির বিপক্ষে। কিন্তু তা হলেও আরও কিছু মানুষ আছে যারা মন্দিরে পশুবলি চড়ায়। বিভিন্ন মন্দিরে, কালীমন্দির বা দুর্গামন্দিরে পশু বলি চড়ানোর রেওয়াজ অাছে। ছাগল, মহিষ বলির ওাশাপাশি ভেঁড়াও বলি দেওয়া হয় মন্দিরে। প্রকাশ্য দিবালোকে লোকচক্ষুর সামনে মাংসের দোকানে পশু বধ নিষিদ্ধ হলেও এখনও বেশ কিছু মন্দিরে প্রকাশ্যে পশু বলি দেওয়া হয়। পূজা-অর্চনার নাম করে ভারতবর্ষের বিভিন্ন জায়গার সাথে সাথে ত্রিপুরাতেও চলছিল এই প্রথা। এবার ত্রিপুরা হাইকোর্ট মন্দিরে পশুবলি বন্ধ করে দেওয়ার মতো ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিল। জানা গেছে, প্রাক্তন বিচারপতি সুভাষ ভট্টাচার্য জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তারপরই এই নির্দেশ দেয় ত্রিপুরা হাইকোর্ট। এই রায় দিয়েছেন ত্রিপুরার স্পেশাল ব্রাঞ্চের বিচারপতি শুভাশিস তলাপাত্র। গত বছরই সুভাষ ভট্টাচার্য মন্দিরে বলি চড়ানোর বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। প্রসঙ্গত, উল্লেখ করা হয় এতদিন ধরে ত্রিপুরেশ্বরী, দুর্গা মন্দির সহ বিভিন্ন জায়গায় বলি চড়ানো হচ্ছিল। তাতে সুভাষবাবুর অত্যন্ত কষ্ট হচ্ছিল। আর সেই মানবিকতার প্রশ্ন তুলেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে পশুবলি তুলে দেওয়ার আর্জি জানান। সরকারের পক্ষ থেকে চারবার জবাব চাওয়া হলেও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। তারপরই নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয় পশুবলি। অবশেষে ত্রিপুরা সরকারও বলি নিষিদ্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য দক্ষিণেশ্বরের কালী মন্দিরে পশু বলি দেওয়া হচ্ছিল। সেই সময় রামকৃষ্ণদেব গঙ্গার পাড়ে বসে অঝোরে কাঁদছিলেন পশুর চিৎকার শুনে। তখন তাঁকে ভক্তরা বলেন আপনি পশুবলি বন্ধ করে দিচ্ছেন না কেন? তখন পরমহংস জানান এভাবেই পশুদের মৃত্যুতে ওদের মুক্তি ঘটবে। কিন্তু আসল ব্যাপার এই সমাজে জৈবিক চক্র চালাতে গেলে অবধারিত পশু হত্যা। তবেই সমাজের বাস্তুতন্ত্র বজায় থাকবে। তবে প্রকাশ্যে পশুবলি বন্ধের সিদ্ধান্তকে অনেকেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। তবে এখন দেখার ত্রিপুরার দেখাদেখি সমগ্র ভরতে এই কঠোর রীতি বন্ধ করে কি না।

Loading

Leave a Reply