জেলা

বারোটার পর প্রতিমা তৈরি করতে গেলে ঘুম পাড়ানির দেশে পাড়ি দেন প্রতিমা শিল্পীরা

হুগলির হরিপাল থানার ওলিপুর গ্রামের সরকার বাড়ির পুজো প্রায় ২০০ বছর অতিক্রান্ত। এই মন্ডপেই আগে কালীপূজা হত। মায়ের স্বপ্ন দেশ পেয়ে দুর্গাপূজা শুরু হয়। ষোড়শ পাচারে মায়ের পূজারচেনা হয়ে থাকে এখানে এবং সাত্বিক মতে। আগে এই পূজায় ছাগ বলি হলেও পরবর্তী সময়, পরিবারে নীলরতন সরকার ছাগ বলি তুলে দেয় কারণ উনি রাধা স্বামীর ভক্ত ছিলেন । এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন নিরোদাময়ী দাসী। এই পূজো চলাকালীন কোনরকম ভুল ত্রুটি হলে তার ফল কিন্তু খুব মারাত্মক হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অনুমান অনেকের। অনেককে অকালে চলেও যেতে হয়েছে ।

তবে সরকার বাড়ির প্রতিমা শিল্পীদের মুখে কিন্তু এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। এই সরকার বাড়িতে ঠাকুর তৈরি করতে আসলে কোন রকম আমিস খাওয়া যাবে না। সম্পূর্ণ নিরামিষ ভোজি হতে হবে তাকে। তারপর সে প্রতিমার গায়ে হাত দিতে পারবে। অন্যথায় রাতের অন্ধকারে স্বপ্নাদেশে ভয়াল ভয়ংকর স্বপ্ন, স্বপ্নের মধ্যে আনাগোনা করবে বিষধর সাপসহ কেংরা বিছের অত্যাচার। প্রতিমা শিল্পীরা জানান এই প্রতিমা গড়তে গেলে আমরা যদি মনে করি রাত্রিযাপন করে কাজ করবো আমাদের কিন্তু করতে দেওয়া হয় না। রাত বারোটা বাজলে আমাদের কে কেউ যেন ঘুম পারানির দেশে নিয়ে চলে যায়। অর্থাৎ কেউ ঘুমোতে না চাইলেও তাকে কিন্তু ঘুম পাড়িয়ে দেয়া হয় । মায়ের চক্ষুদানেও কিন্তু এক বিরল নিয়ম আছে। যে শিল্পী চক্ষুদান করবেন তাকে কিন্তু জলস্পর্শ করলেও চলবে না যতক্ষণ না চক্ষু দান হচ্ছে। তিনি নির্জলা উপোস করে চক্ষু দান করে থাকেন। এই রকমই কঠোর নিয়ম নিষ্ঠার সাথে ২০০ বছর ধরে পালিত হয়ে আসছে হরিপালের এই দুর্গা পুজো।

Loading

Leave a Reply