বেশ কয়েক দফা দাবি নিয়ে খানাকুল এবং গোঘাটের দুটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দুপুর ১২ টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত ২ ঘণ্টার অবস্থান বিক্ষোভ ও কর্মবিরতি পালন করল জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনস্থ কর্মীরা। এদিন বুকে কালো ব্যাচ এঁটে ৫ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেন দুটি ব্লকের প্রায় শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মী সহ চিকিৎসা ব্যবস্থার সাথে যুক্ত কর্মীরা।
স্বাস্থ্যকর্মীদের সূত্র থেকে জানা গেছে, ২০ থেকে ২২ বছর ধরে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে তারা কাজ করলেও তাদের ক্ষেত্রে কোনওরকম সরকার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় নি। বারেবারে পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তাদের পাশে কেউই দাঁড়ায়নি। ভয়ঙ্কর কোভিড পরিস্থিতিতেও তারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে পরিষেবা দিয়ে গেছেন। ঘর-বাড়ি ভুলে একপ্রকার এই মহামারীর সাথে তারা লড়াই করলেও সংশ্লিষ্ট দপ্তর তাদের কথা একবারও ভাবেনি। দীর্ঘদিন ধরে তারা চাকরি করলেও তাদের কাজের ক্ষেত্রে কোনও স্থায়ীকরণ ও বেতন পরিকাঠামো বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই এদিন কর্মবিরতি পালন করতে হল বলে জানালেন স্বাস্থ্যকর্মী লতা দত্ত।
অন্যদিকে চিকিৎসা ব্যবস্থার সাথে যুক্ত চিন্ময় মন্ডল বলছেন, তারা বহুদিন ধরে কাজ করলেও এখনও তারা অস্থায়ী কর্মীই রয়েছেন। তাদের স্থায়ীকরণের ক্ষেত্রে কোনও সদর্থক পদক্ষেপ নিচ্ছে না দপ্তর। এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে কর্মরত অবস্থায় অনেক সহকর্মীকে তারা হারিয়েছেন। তাদের পরিবারের কথা কেউ ভাবেনি। একপ্রকার তাদের ওপর রোলার চালাচ্ছে সরকার। তাই কাজের নিরাপত্তা ও বেতন পরিকাঠামো বৃদ্ধির দাবিতে প্রতীকী দু’ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করলেন। একইসাথে মধুমিতা ঘোষ রায় নামে এক স্বাস্থ্যকর্মী বলছেন, তারা চান তাদের সাথে সরকারের যে ধরনের আচরণ করছে তা অতি দ্রুত বন্ধ হোক। এবার অন্তত তাদের জন্য সদর্থক কোনও পদক্ষেপ নিক না সরকার। না হলে আগামীদিনে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে।
অপরদিকে খানাকুলের সরকারি হাসপাতালের অস্থায়ী NHM কর্মীরা এবার আন্দলনের পথে নামল। সমকাজে সম বেতনের দাবি নিয়ে মঙ্গলবার খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা এদিন কর্মবিরতি করে হাসপাতালের গেটের সামনে প্রতিকি বিক্ষোভ দেখালেন। কালো ব্যাচ পরে ন্যায় বিচার চেয়ে আন্দলনে সামিল হলেন তারা।
জানা গেছে, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ANM কর্মীরা যারা মূলত স্কুল স্বাস্থ্য কর্মী,গাইনেকোলজি M.O, RBSK M.O নবজাতক শিশু বিভাগের সহায়িকা সহ হাসপাতালে যুক্ত বিভিন্ন কাজের কর্মীরা এদিন তাদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে আন্দলনে নামেন। অভিযোগ “রাজ্য সরকার তাদের যোগ্য মর্যাদা দিচ্ছেন না। বর্তমানে কভিড পরিস্থিতিতে বিভিন্ন কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পরিষেবা দিয়ে সরকারি নির্দেশ পালন করলেও তাদের সরকার পক্ষ তাদের দেখছে না বলে অভিযোগ তুলে কর্মবিরতিতে বসেন। এদিন খানাকুল ১ ব্লকের ১৩ টি পঞ্চায়েত এলাকার ৪০টি সাব সেন্টারে এ এন এম পদে বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরিষেবা কাজে যুক্ত কর্মীরা কর্মবিরতিতে শামিল হন। এদিন ২ ঘন্টা ধরে চলে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ। এই বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে লিখিত ডেপুটেশন দেওয়া হয়। হাসপাতালের BMOH. সুশান্ত মজুমদার বলেন” সমস্ত বিসয়টি রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর ও উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।