আজ বিকাল তিন টেয় হাই কোর্টে শুনানি হয়ে গেল বিজিটিএ ‘র করা টিজিটি সংক্রান্ত কন্টেম্পট মামলার। শুনানির পর খুশীর আমেজ বিজিটিএ শিবিরে! উল্লেখ করা যেতে পারে যে বৃহত্তর গ্র্যাজুয়েট টিচারস এসোসিয়েশান বা বিজিটিএ দীর্ঘ দিন ধরে গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের পাশাপাশি হাইকোর্টে আইনী লড়াইয়ে অনেকগুলি মামলা জিতেছিল ট্রেন্ডড গ্র্যাজুয়েট টিচারস স্কেলের সপক্ষে। বিজিটিএ সুত্রের দাবী ঐ মামলাগুলির রিট এ তারা চেয়েছিলেন গ্র্যাজুয়েট টিচারদের জন্য নির্ধারিত পে স্কেল (৯০০০-৪০৫০০ স্কেল ও গ্রেড পে ৪৬০০)এবং কোর্টের নির্দেশে তারা পে কমিশনে জমা দিয়েছিলেন নির্দিষ্ট ফিটমেন্ট বা পে প্রোটেকশন এর হিসেব। কিন্তু গত ২৫ শে সেপ্টেম্বর ও ১৩ই ডিসেম্বর ঘোষিত যথাক্রমে মূল রোপা ও শিক্ষা দপ্তরের রোপা তে কোন প্রভাব পড়েনি সেইসব রায়ের। বিজিটিএ যথারীতি শুরু করেছিল আদালত অবমাননা মামলা। এই মামলায় গোড়া থেকে অসহযোগীতা করে আসছিল সরকার তথা পে কমিশন। গত ৪ঠা জানুয়ারী কোর্ট কমপ্লায়েন্স এভিডেভিড জমা দিতে বললে ও পে কমিশন তা করেনি, পরের শুনানি তে কোর্ট ভর্ৎসনা করার পর সরকারী আইনজীবী আরো তিন দিন সময় চেয়ে কাকুতি মিনতি করেন। তা মঞ্জুর ও হয়। কিন্তু পে কমিশন যে এভিডেভিড জমা দেয় তাতে গত ২২ শে জুলাই ২০১৯ এর রায়ের কমপ্লায়েন্স ই ছিল না।
পরিবর্তে কমিশন জানায় যে তারা বিভিন্ন ব্যাচ ক্যাডেট এর হিসাব করেন নি সে কথা তারা পিটিশনার কে জানিয়েছিলেন,এবং যেহেতু তারা ৭ ই আগষ্ট ২০১৯ বিজিটিএ কে নিয়ে হেয়ারিং করেছিলেন তাই এই মামলাটি ডিস্পোজ করা হোক। ৬ষষ্ঠ বেতন কমিশনের এহেন এভিডেভিড দেওয়ার পর আজ হাইকোর্টে আজ মামলাটি পুনরায় শুনানির জন্য ওঠে। হাই কোর্ট চত্তরে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত গ্র্যাজুয়েট টিচারদের ভীড় জমে যায়! সুত্রের খবর প্রায় ৫শতাধিক গ্র্যাজুয়েট টিচার উপস্থিত ছিলেন! পুলিশ টিচারদের ৩৯ নং কোর্টে ঢোকার পারমিশন দেয় নি এনন কি বাইরে অপেক্ষা করতে বাধা দেয়। বিকেল তিনটেয় শুনানি শুরু হলে বিজিটিএ’র আইনজীবী সওয়াল জবাবে কোর্ট কে জানান যে যেহেতু ২২শে জুলাইয়ের রায় মানা হয় নি পে কমিশনের দেওয়া এভিডেভিডে, তাই হিসেব সহ পুর্নাঙ্গ রিপোর্ট পেশ করে তবেই কার্যকরী হোক ৬ষষ্ঠ বেতন কমিশনের শিক্ষা দপ্তরের রোপা। সরকারী পক্ষের আইনজীবী কার্যত কোন প্রতিরোধ ই গড়ে তুলতে পারেন নি। তিনি বার বার এটা বলতে চান যে ৭ ই আগষ্ট কমিশন কোর্টের রায় কে কমপ্লাই করেছেন। তাতে অবশ্য মহামান্য বিচারপতি কর্নপাত করেন নি। তিনি তার ইন্টারিম রায়ে বলেন যে আগামী ১১ই ফেব্রুয়ারীর মধ্যে ২২ শে জুলাই ২০১৯ এর রায়ক মেনে রিপোর্ট দিতে হবে পে কমিশন কে। আর তা না হলে ঐ দিন তিনটের সময় শুনানি চলাকালীন বিকাল ৪টের মধ্যে তিনি পে কমিশনের চেয়ারম্যান কে সশরীরে হাজির করাবেন কোর্টে ও পরে তার সীদ্ধান্ত জানাবেন।
রায় সম্পর্কে বিজিটিএ’র সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র শ্রী সৌরেন ভট্টাচার্য মহাশয়ের কাছে আজকের রায় সসম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ” কোর্টের রায় গনতন্ত্র কে প্রতিষ্ঠিত করল আরো একবার। গনতন্ত্রে ই বঞ্চিতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে মহামান্য হাইকোর্ট ও সুপ্রীম কোর্ট। আমরা আজকের রায় কে স্বাগত জানাচ্ছি,সাথে সাথে এ আশা ও করছি যে হাইকোর্ট ই বাধ্য করতে সক্ষম হবে এই অবাধ্য পে কমিশন তথা রাজ্য সরকারকে গ্র্যাজুয়েট টিচারদের নির্ধারিত পে স্কেল দিতে।” তিনি আরো জানান, “আমরা মহামান্য হাইকোর্টের উপর সম্পুর্ন আস্থা রেখেও গনতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ষোলকলা সম্পুর্ন করেই দিনক্ষন ঘোষণা করব। দেখতে চাই সরকার কতদিন জেনে বুঝে গ্র্যাজুয়েট টিচারদের বঞ্চিত করতে পারে!”