ঋদি হক, ঢাকা:- পদ্মার ইলিশ ? নাম উচ্চারণের সঙ্গে ইলিশের টাটকা গন্ধ অনুভূত হয়। আর তা লাগবেই বা না কেন? পদ্মার রূপালী ইলিশ বাঙালির পাতা ওঠবে না, তা কি করে হয়। এবারে অপেক্ষার পালা শেষ। দু’মাসের নিষেধাজ্ঞা দিন আজ শেষ হচ্ছে। মধ্যরাত থেকেই পদ্মা-মেঘনার জলে পড়বে হাজারো জেলের জাল। দু’মাস অলস সময়ে জাল নৌকা ঠিকঠাক করে কাটিয়ে দিয়েছেন। চাঁদপুর, বরিশালসহ আশপাশের হাজার আটেক জেলের প্রস্তুতি সম্পন্ন। তারা এদিন মধ্যরাত থেকেই পদ্মার অথৈ জলে নৌকা ভাসাবে। মার্চ-এপিল দু’মাস জাটকা রক্ষায় ইলিশ শিকারে নিশেধাজ্ঞা ছিল। এদিন নিষেজ্ঞার দিন শেষ। এবারে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে এমন আশার বুক বেধে আছেন পদ্মাপারের জেলেরা।
গত দেড় দশকে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে আড়াই গুণের বেশি। এমন আশার বাণী শোনালেন, চাঁদপুর মৎস্যবিজ্ঞানী গবেষণাগার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. আনিছুর রহমান। জাটকা ইলিশ শিকার রক্ষায় মার্চ-এপ্রিল দুইমাস পদ্মা-মেঘনাসহ প্রায় ১২টি অভয়রণ্যে ইলিশসহ সকল প্রকারের মাছ শিকার নিষিদ্ধ করে সরকার। এই দুই জেলেদের খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে সরকারের তরফে। ফিবারের চেয়ে এবারে জেলেরা কাঙ্খিত ইলিশ শিকার করতে পারবেন। চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনাপাড়ের অনেক জেলেই সাময়িক পেশা হারিয়ে চরম দুর্ভোগে দিন কাটান। নদীতে মাছ শিকারে যাবেন তাই জাল বুনন আর মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। করোনাভাইসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে হাজার হাজার জেলে প্রস্তুতি নিয়েছেন ইলিশ শিকারের। মধ্য রাত থেকে জেলের দল পদ্মায় নামবে। তাদের জালে ধরা পড়বে ঝাকে ঝাকে রূপালি ইলিশ। চোখের সামনে স্বপ্ন। আকালের সময় ইলিশ তাদের ভাগ্য খুলে দেবে। পদ্মা-মেঘনায় নেমে আসবেন চাঁদপুর, মতলব ও আশাপাশের প্রায় ৮ হাজার জেলে। মেঘলা আকাশ। ইলিশ শিকারের উপযুক্ত পরিবেশ। ইলিশ গবেষক ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, এবারো কাঙ্খিত ইলিশ ধরা পড়বে। কারণ, জাটকা রক্ষার কর্মসূচি সফল হওয়ায় এ বছর ইলিশের উৎপাদন বাড়েছে। বর্তমানে ইলিশের অভয়াশ্রমের পরিধিও বেড়েছে। এখন ইলিশসহ অন্য মাছ ধরতে জেলেরা প্রস্তুত। জেলার মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী জানান, নদীতে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা দুই মাস থাকলেও সরকার জেলেদের চাল দিচ্ছেন চার মাসের জন্য। এখন যে চাল দেয়া হচ্ছে, তা এপ্রিল ও মে মাসের। আগামী মাসের ৭ মে মধ্যে বিতরণের কথা রয়েছে। উল্লেখ্য, বর্তমান সরকারের তৎপরতায় প্রতিবছর ইলিশের উৎপাদন বেড়েই চলেছে। পৃথিবীতে যে পরিমাণ ইলিশ উৎপাদন হয়ে থাকে তার ৮০% হয় বাংলাদেশে। তাই বলা চলে ইলিশের বাড়ি বাংলাদেশ।