রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কোন শব্দ সত্যিই বোধহয় হয় না। বর্তমান রাজনীতিতে আদর্শ অনেকটাই অবলুপ্তির পথে। আজকে যে শত্রু আগামীকালই তার মিত্র হয়ে ওঠার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। সাধারণ মানুষের ভোটে একজন রাজনীতিবিদ জয়লাভ করার পর তিনি তাঁর নিজস্ব স্বার্থসিদ্ধির জন্য ইচ্ছে মতো দল পরিবর্তন করেন। দল পরিবর্তন করার সময় একবারও মনে হয় না যারা তাঁকে ভোট দিয়েছিলেন তাঁদের এই দল পরিবর্তন সায় আছে কিনা। কদিন আগেই কংগ্রেসের জ্যোতিরিন্দ্রনাথ সিন্ধিয়া বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আবার এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের এক হেভিওয়েট বিজেপি নেত্রী হঠাৎ করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন। বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায় উঠতে-বসতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেন হঠাৎ তাঁর গলায় শোনা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা। সূত্রের খবর, বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংগঠন চালানোর প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “সংগঠন চালানোর জন্য উনি খুব ভালো।
সংগঠন চালানোর গুণগুলো ভালো। আমার মা, বন্ধুবান্ধব ওনাকে ভোট দিয়েছিলেন।”তবে প্রশাসক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে একেবারেই ভাল নয়, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন এই বিজেপি নেত্রী। তিনি বলেন, “উনি প্রশাসক হিসেবে ভালো নয়। ভালো প্রশাসক হতে গেলে পক্ষপাতহীন হতে হয়। কিন্তু সেখানে বারবার পক্ষপাতদুষ্টের প্রমাণ দিয়েছেন। অন্যায়ের সঙ্গে থেকেছেন। এটা ওনার ভুল হয়ে গিয়েছে।” বিজেপি নেতারা “দিদিকে বলো” কর্মসূচির বিরোধিতা করলেও, এদিন সেই ব্যাপারে প্রশংসার সুর শোনা যায় রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের গলায়। তিনি বলেন, “দিদিকে বলো কর্মসূচি খারাপ ছিল না। বিরোধী হলেই সব খারাপ দেখতে হবে, এটা বিশ্বাস করি না। প্রচেষ্টা খারাপ ছিল না। তবে এতে উনি সফল না। আপনি যদি প্রথম থেকে যা করেছেন, সেভাবে কাজ করেছেন, সেটা যদি না হত, তাহলে এই পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হত না। উনি যদি প্রথম থেকে দলের ওপর নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন, তাহলে এদিন আসত না।”
এদিকে রবীন্দ্রভারতীতে বসন্ত উৎসব নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, এদিন সেই ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া সমালোচনা করেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “এটা লজ্জার হত না। এজন্য দায়ী মুখ্যমন্ত্রীই। আমার মা ওনাকে ভোট দিয়েছিল। শিক্ষিত সমাজের লোকেরা ওনাকে ভোট দিয়েছিল। সিপিএমকে হটিয়ে ওনাকে অনেক বিশ্বাস করে আনা হয়েছিল। আমার তো এখন সেই সমাজকে প্রশ্ন, বোঝান ওকে, কারও কথা শোনেন না? নাকি উনি তোষামোদ করতে ব্যস্ত। এখন বুদ্ধি দেওয়ার জন্য প্রশান্ত কিশোরকে লাগে।”
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের মত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধী নেত্রী যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন, তাতে জল্পনা বৃদ্ধি পাওয়াই স্বাভাবিক। তবে শেষ পর্যন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কিছুটা কটাক্ষ করলেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায় নরমে গরমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছু কাজের প্রশংসা করে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পন্থাকে ঠিক কোনদিকে এগিয়ে নিয়ে যান, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।