জেলা

মুখ্যমন্ত্রীর অনুদান পৌঁছলেও অর্থাভাবে প্রায় ২ মাস বিনা চিকিৎসায় ক্যান্সার আক্রান্ত হুগলির বৃদ্ধ !

সুদীপ দাস, হুগলি, আজ বাংলা :- ফুচকা বিক্রি করে বৌ-ছেলেকে নিয়ে ভালোই চলছিল সংসার। কিন্তু বছরখানেক আগেই সবকিছু যেন এলোমেলো হয়ে গেল। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা চলাকালীন বোনের ক্যান্সার ধরা পরে। বাবার চিকিৎসার খরচ জোগাতে মাধ্যমিকের পরই বন্ধ হয় ছেলের পড়াশোনা। একদিকে রাস্তায় ঘুরে-ঘুরে ফুচকা বিক্রি অন্যদিকে মাঝেমধ্যেই বাবাকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য কোলকাতায় ছোটাছুটি, এক অন্য লড়াই শুরু হয় চুঁচুড়া সিংহিবাগান এলাকার বাসিন্দা প্রিতমের। বাবা সুভাষ বিশ্বাসের চিকিৎসা শুরু হয় কোলকাতার চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউটে। কিন্তু অর্থ পথের কাঁটা অর্থ। বহু নেতানেত্রীর কাছে ছোটাছুটি করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ত্রাণ তহবিল থেকে ৩৩হাজার টাকা পাঠানো হয় চিত্তরঞ্জন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে।

যে টাকা হাসপাতালের ব্যায় করার কথা ছিল সুভাষ বাবুর চিকিৎসার জন্য। কিন্তু দীর্ঘ সাত মাস হয়ে গেলেও সেই টাকার একআনা ব্যায় হয়নি সুভাষবাবুর চিকিৎসায়। মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে হাসপাতালে টাকা পৌঁছনোর একমাসের মধ্যেই শুরু হয় লকডাউন। যার ফলে বিশ্বাস পরিবারের মাথায় ভেঙে পরে আকাশ। রোগ ধরা পরার পর থেকেই প্রতি মাসে বাবার ওরাল কেমোর জন্য দরকার ১৩হাজার ৫০০টাকা খরচ। সঙ্গে আরও ৩ হাজার টাকার ওষুধ। বাধ্য হয়েই ধার করা শুরু হয় জীবনে বেঁচে থাকার লড়াই বিশ্বাস পরিবারে। বর্তমানে ধারে জর্জরিত হয়ে প্রায় দু’মাস ধরে বন্ধ সুভাষবাবুর চিকিৎসা। বর্তমানে শয্যাশায়ী তিনি।

সুভাষবাবুর স্ত্রী সন্ধ্যা বিশ্বাস বলেন, আমাদের নগদ টাকার দরকার নেই, অসুস্থ মানুষটার দিকে তাকালেই শুধু ভাবি মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে পাঠানো টাকায় যদি কিছুদিন চিকিৎসাটা পেত !

অন্যদিকে অসুস্থ সুভাষবাবুর ছেলে প্রিতমের আক্ষেপ, লকডাউনের মধ্যেও অনেক কষ্ট করে কোলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে যোগাযোগ করেছি। বর্তমানেও করছি। কিন্তু নবান্ন থেকে পাঠানো সেই টাকা আজও বাবার চিকিৎসার জন্য খরচ হল না। ২ মাস ধরে বাবার চিকিৎসা পুরোপুরি বন্ধ।
এবিষয়ে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে দেওয়া টাকাটা হাসপাতাল সুভাষবাবুর চিকিৎসায় খরচ করেছে কিনা আমি জানি না। তবে বিশ্বাস পরিবার যদি আমার সাথে যোগাযোগ করে আমি তাঁদের বিষয়টি সহানুভূতির সাথে দেখব।

Loading

Leave a Reply