এমনিতেই সারা বিশ্বজুড়ে ময়ূর সংকট। উপযুক্ত পরিবেশ না পাওয়ায় এই জাতীয় পাখি আজ একপ্রকার অদৃশ্য। করোনার এই সংকট জনক মুহুর্তে এই পাখিগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে বিশেষ উদ্যোগি হলেন রাজ্যের মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত। চুঁচুড়া থেকে অদূরে ময়ূর মহল বানিয়ে রেখেছেন উপেন্দ্রনাথ কল্যা। কিন্তু এই মুহূর্তে খাদ্যাভাবে ভুগছিল আর এই জাতীয় পাখি। তাই জাতীয় পাখি বাঁচিয়ে রাখতে গিয়ে এল রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত। জানা গেছে, তপন বাবু নিজের উদ্যোগে ওই ময়ূরের পালক উপেন্দ্রনাথ কল্যার হাতে খাদ্যশস্য তুলে দিলেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চুঁচুড়া থেকে প্রায় ৮ কিঃমিঃ দূরে দিল্লি রোড সংলগ্ন পোলবা থানার অন্তর্গত রাজগ্রাম। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে কুন্তী নদী আর দেবানন্দপুরের দিয়ে বয়ে গেছে নদী সরস্বতী। এই দুই নদীর মাঝে প্রায় ৬০০ ময়ূরের বাস। আর এই ময়ূরের দেখভাল করেন গান্ধীগ্রাম শিবদুর্গা ব্রতচারী মন্ডলী। সকাল হলেই মাটিতে শস্যদানা ছড়িয়ে দেন উপেন্দ্রনাথ কল্যা। কিন্তু করোনার জেরে লকডাউন হয়ে যাওয়ায় খাদ্যশস্য চিনতে পারছিলেন না উপেন্দ্রনাথ। তাই তার পাশে দাঁড়াতে এলেন রাজ্যের মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে রাজহাটেরর দক্ষিণ পাড়ার জমিদার জগজ্জীবন সিংহের বাড়িতে একসময় প্রচুর ময়ূর ছিল। পঞ্চাশের দশকের শেষের দিকে জমিদারের আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাইরে ছেড়ে দেওয়া হয় ময়ূর। বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে এই ময়ূরগুলি। বর্তমানে এর সমস্ত দায়িত্ব সামলাচ্ছে ব্রতচারী মণ্ডলি। একটা সময় ছিল দিল্লি রোড সম্প্রসারণে গাছপালা কাটা পড়ে। ময়ূরের বেঁচে থাকা দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
প্রতি মাসে প্রায় ৩ থেকে ৪ কুইন্টাল করে খাদ্যশস্য লাগে। খাবার জন্য এলাকার মানুষ ময়ূরগুলিকে নিজেদের ঘরের সদস্য ভেবেই দেখভাল করেন। স্থানীয় মানুষদের একাংশ বলছেন, এই সংকটজনক মুহূর্তে জাতীয় পাখিকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রত্যেকেরই উদ্যোগ নেওয়া উচিত। তারা তারা মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত এর এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন অনেকে বলছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা যখন মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন একইসাথে জাতীয় পাখিকে বাঁচিয়ে রাখতেও তাদের ভাবা উচিত। আর এদিন তপনবাবু যা করলেন বিবেকানন্দের বাণী ‘জীবে প্রেম করে যেইজন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’ তারই জলন্ত উদাহরণ।