এবার সদ্যোজাত শিশুকে খুনের অভিযোগ উঠল গৃহবধূর বাপের বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। বুধবার দিনভর এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় খানাকুলের কিশোরপুর। এলাকায় সমস্ত বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হবে বলে গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ি সূত্রে জানা গিয়েছে। ঘটনাকে ঘিরে নিন্দার ঝড় খানাকুলজুড়ে।
সূত্র থেকে জানা গেছে, প্রায় তিন বছর আগে খানাকুলের কিশোরপুর এলাকার অর্ণব মালিকের সাথে সম্বন্ধ করে বিয়ে হয় বন্দিপুর এলাকার সুপ্রিয়ার। বিয়ের কিছুদিন পরে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন সুপ্রিয়ার নাকি অন্য এক যুবকের সাথে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। বারে বারে শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে এই সম্পর্ক মেনে নিতে অস্বীকার করা হয়। ভিন রাজ্যে তামার কাজ করেন অর্ণব। লকডাউনে বাড়ি ফিরেছে সে। এরপর কয়েকদিন আগে অর্ণব তার স্ত্রীকে অন্য এক যুবকের সাথে ফোন করতে দেখেন। পাশাপাশি তার কল রেকর্ড শোনেন। তারপরই সমস্ত বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায় তার। তবুও স্ত্রীকে বুঝিয়ে সুখের সংসার করার আশায় বুক বেঁধেছিল সে। এর ঠিক কিছুদিন পর স্ত্রী গর্ভবতী অবস্থায় বাপের বাড়িতে চলে যায়। কয়েকদিন আগে ছিল সুপ্রিয়ার সন্তান প্রসব করার দিন। সেই মোতাবেক শ্বশুর বাড়িতে যায় অর্ণব। পরে সোমবার আরামবাগ শহরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় তাকে। সুপ্রিয়ার স্বামীকে বুধবার সকালে সদ্যোজাত ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর বলা হয় বাচ্চা মারা গেছে। কান্নায় ভেঙে পড়েন অর্ণব সহ তার পরিবারের লোকজন। অর্নবের পরিবারের দাবি সদ্যোজাত শিশুর মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পাশাপাশি শরীরের বেশ কয়েকটি জায়গাতেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে তাকে ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরই মেরে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অর্নবের পরিবার।
পরিবার সূত্র থেকে জানা গেছে, অর্ণব বাইরে থাকার সুযোগে কাজে লাগিয়ে কয়েকবার শ্বশুরবাড়ি থেকে নাকি পালিয়ে যাই সুপ্রিয়া। কিন্তু সবকিছু ফেলে সংসারে সুখের জন্য সব কিছুই মেনে নিয়েছিল অর্ণবের পরিবারের লোকজন। কিন্তু এদিনের এই ঘটনা থেকে পরিবারের লোকজন চাইছেন অর্ণবের সাথে সুপ্রিয়ার বিবাহবিচ্ছেদ করতে। কারণ একটি ফুটফুটে শিশুকে যা করা হল, তাতে করে আগামীদিনে ভয়ঙ্কর কিছু ঘটনা ঘটে গেলেও ঘটে যেতে পারে বলেই আশঙ্কা করেছেন তারা। তাই আগামীদিনে সুপ্রিয়ার সাথে বিবাহবিচ্ছেদ করে নতুন বিয়ে করতে চাইছেন সুপ্রিয়ার স্বামী অর্ণব মালিক। এ ঘটনার পর সরাসরি মৃত ওই শিশুটিকে অর্ণবের হাতে তুলে দেয় বাপের বাড়ির লোকজন। আর এর পর থেকে সুপ্রিয়ার বাপের বাড়ির তরফ থেকে কোনরকম যোগাযোগ রাখা হয়নি অর্নব ও তার পরিবারের সাথে। আর এর জেরেই সন্দেহ ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে।
এ বিষয়ে সুপ্রিয়ার বাপের বাড়ির লোকজনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা অবশ্য এ বিষয়ে সদুত্তর দিচ্ছেন না। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ বলছেন, সমস্ত বিষয়টি নিয়ে অর্ণবের উচিত ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করানো। তাতে করে সত্যি ঘটনা প্রকাশ্যে আসবে। সত্যি যদি এটি খুন হয় তাহলে যে ফুটফুটে বাচ্চাটিকে পৃথিবীর আলো দেখতে দিল না তাদের আইন মোতাবেক কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।