মোদি সরকারের ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব দেওয়ার নীতিতে আদৌ যে খুশি নয় বাংলাদেশ সরকার তা তারা আগেই জানিয়ে দিয়েছে। এমনকী তাদের আপত্তির কথা বেশ কয়েকবার প্রকাশও করেছে হাসিনা সরকার। সেই অসন্তোষের আগুনে বাড়তি ইন্ধন যোগাচ্ছে ভারতীয় ভিসা সংক্রান্ত বিধি। যেখানে উল্লিখিত নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত সময় এদেশে থাকার জন্য একজন মুসলিম বাংলাদেশী নাগরিককে সে দেশেরই একজন হিন্দু নাগরিক তুলনায় কয়েক গুণ বেশি জরিমানা দেওয়ার নিয়ম করা হয়েছে। যেখানে বিদেশমন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী দু বছরের বেশি সময় ধরে একজন মুসলিম বাংলাদেশি নাগরিক, হিন্দু বাংলাদেশী নাগরিক তুলনায় বেশি পরিমাণ জরিমানা প্রদান করেছেন। এর আগে ভারত সরকারের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে ২০১৮ সালে তৈরি এই আইনের বিরোধিতা করেছিল বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। একই জায়গায় রয়ে গেছে বিষয়টি।
নিষ্পত্তির জন্য এবার আরও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা ভাবছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সরকারও। দেশের বিদেশমন্ত্রকের মধ্যে আলোচনায় ভারত সরকারের এই বিভেদ নিয়ে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাতে পারে বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের আগে মাথাচাড়া দিয়েছে এই ভিসা বিতর্ক। এই জটিলতা সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা গেল, ভারতে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে কেউ যদি তার ভারতীয় ভিসায় নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত সময়ে দেশে থাকেন, তাহলে তাকে ভারতীয় মূল্যে জরিমানা দেওয়ার মাপকাঠি করা হয়েছে। ভারত সরকারের নীতি অনুযায়ী বাংলাদেশে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে সংখ্যালঘুরা নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত ৯০ দিন পর্যন্ত এদেশে থাকার জন্য মাত্র ১০০টাকা জরিমানা দিয়ে থাকেন।
অন্যদিকে ভিসার মেয়াদ পেরিয়ে একই পরিমাণ অতিরিক্ত সময়ে এদেশে থাকার জন্য তিনটি দেশের মুসলিম নাগরিককে ২১ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। এমনকী বাংলাদেশ পাকিস্তান বা আফগানিস্তান থেকে আসা সেদেশের কোনও সংখ্যালঘু নাগরিকদের ভিসার অতিরিক্ত দু বছর ভারতে থাকেন, তাহলে তার জন্য জরিমানার পরিমাণ মাত্র ২০০ টাকা। কিন্তু মুসলিম নাগরিকের ক্ষেত্রে সেই জরিমানা ২৮ হাজার টাকা হয়। তিনটি দেশের মুসলিম নাগরিকদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত দু’বছরের বেশি সময় ভারতে থাকার কারণে এই জরিমানার পরিমাণ হয় 35 হাজার টাকা। এই বিভেদ নীতি নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ বাংলাদেশ সরকার।