ফের নক্ষত্র পতন। প্রয়াত হলেন ক্রীড়াজগতের অন্যতম মুখ চুনী গোস্বামী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ।জানা গেছে, বেশ কয়েকদিন ধরেই অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। এদিন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন চুনী গোস্বামী। তার নেতৃত্বে ১৯১৭ সালে এশিয়ান গেমসে সোনা জেতে ভারত। ১৯৬৪ সালের এশিয়া কাপে তার নেতৃত্ব রূপো জয়লাভ। ১৯৬৮ তিনি অবসর গ্রহণ করেন। তারপর ভারতীয় ফুটবল দলের কোচের দায়িত্ব নেন। তিনি ক্রিকেটার হিসেবে নজরকাড়া পারফরম্যান্স করেন। অলরাউন্ডার হিসেবে খেলেছেন তিনি।
তার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। এদিন দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকাল ৫টায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন এই প্রবাদপ্রতিম খেলোয়াড়।
একজন বিখ্যাত বাঙালি ফুটবল খেলোয়াড়। তিনি ভারতের জাতীয় দলেও খেলেছেন। ক্রিকেটার হিসেবেও তিনি সফল ছিলেন। বাংলা দলের হয়ে রনজি ট্রফি তে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মোহনবাগানের জুনিয়র দলে খেলেন। ভারতীয় ফুটবলার বলাইদাস চট্টোপাধ্যায় ও বাঘা সোমকে কোচ হিসেবে পান তিনি। এরপর ১৯৫৪ থেকে ১৯৬৮ অবধি মোহনবাগানের মূল দলে খেলেন। তিনি মূলত স্ট্রাইকার পজিসনে খেলতেন। তিনি ১৯৬০ থেকে ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দ অবধি মোহনবাগানের অধিনায়ক ছিলেন। এই সময়ে মোহনবাগান ডুরান্ড কাপ সহ বহু প্রতিযোগিতায় ভাল ফল করেছিল। তার ফুটবল জীবনের সবথকে বড় কৃতিত্ব ভারতের অধিনায়ক হিসাবে ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে জাকার্তায় এশিয়ান গেমসের সোনা জয়। ফাইনালে ভারত দক্ষিণ কোরিয়াকে ২-১ গোলে পরাস্ত করেছিল। গোলদুটি করেছিলেন পি কে ব্যানার্জী এবং জার্নেল সিং। এছাড়া তিনি অধিনায়ক হিসাবে তেল আভিভে এশিয়া কাপের রৌপ্য পদক জয় করেছিলেন।
ফুটবল খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পরে তিনি ক্রিকেট খেলায় মনোনিবেশ করেন এবং রঞ্জি ট্রফিতে তিনি বাংলার অধিনায়কত্ব করেন। তিনি দুবার রঞ্জি ট্রফির ফাইনাল খেলেছিলেন। তিনি ডানহাতি ব্যাটসম্যান ছিলেন এবং ডানহাতে মিডিয়াম পেস বল করতেন। তিনি ৪৬টি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট ম্যাচ খেলে একটি সেঞ্চুরি সহ ১৫৯২ রান করেছিলেন। তিনি বল করে ৪৭টি উইকেটও নিয়েছিলেন। ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে চুনী গোস্বামী অর্জুন পুরস্কার এবং ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে পদ্মশ্রী পুরস্কার পেয়েছিলেন। ২০০৫ সালে তিনি মোহনবাগান রত্ন পান।