আরামবাগ জেলা

জুতোর ফিতেয় বাঁধা স্বপ্ন, পাশে দাঁড়াল পুলিশ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ

 

আরামবাগ মহকুমার ছোট্ট গ্রাম রসিকচকের সোনালি জানা ।বয়স মাত্র ১৫। অথচ তার কৃতিত্ব গ্রাম ছাড়িয়ে রাজ্য, এমনকি দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। পরিবারের আর্থিক অবস্থা সচ্ছল নয়, তবু দমে যায়নি সে। পরপর রাজ্য ও জাতীয় প্রতিযোগিতায় একের পর এক পদক জিতে নিয়েছে সোনালি। বিহারে জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ৪০০ মিটার হার্ডলসে জিতেছে রুপো, কলকাতায় রাজ্য প্রতিযোগিতায় ১০০ মিটার হার্ডলসে সোনা। এবার তার লক্ষ্য—ওড়িশার মাটিতে জাতীয় ক্রীড়ায় সাফল্য।

কিন্তু এক জোড়া উন্নতমানের অ্যাথলেটিক্স জুতা কেনার সামর্থ্য ছিল না পরিবারের। তাই পরিবারের অনুরোধে এগিয়ে এলেন হুগলি গ্রামীণ জেলার পুলিশকর্তারা। সোমবার আরামবাগের এসডিপিও সুপ্রভাত চক্রবর্তী, আরামবাগ থানার আইসি রাকেশ সিং, পুরশুড়া থানার ওসি শুভজিৎ দে-সহ একাধিক আধিকারিক সোনালির হাতে তুলে দিলেন নতুন জুতা। সেই সঙ্গে জেলার পুলিশ সুপারের পক্ষ থেকে পৌঁছে গেল শুভেচ্ছা ও আশীর্বাদ।

নতুন জুতা হাতে পেয়ে খুশিতে ভরে উঠল সোনালির চোখ। পাশে দাঁড়িয়ে হাসলেন বাবা। পুলিশের এই মানবিক ভূমিকা শুধু সোনালির স্বপ্ন পূরণ করল না, সমাজকেও দিল এক অন্য বার্তা—আবেগ, সহমর্মিতা ও ভালোবাসাই এগিয়ে নিয়ে যায় প্রতিভাকে।আগামী দিনে সোনালি যদি আন্তর্জাতিক মঞ্চে দেশের নাম উজ্জ্বল করে, তার পদক্ষেপে থাকবে এই ভালোবাসার ছোঁয়া। সোনালি বলে, আমি ভীষণ খুশি, যা বলে বোঝাতে পারব না। এই ভালোবাসা ও আশীর্বাদ নিয়েই আমি মাঠে নামব। চেষ্টা করব দেশের নাম উজ্জ্বল করতে।

এসডিপিও সুপ্রভাত চক্রবর্তী বলেন,সোনালির মতো প্রতিভাবান ক্রীড়াবিদরা আমাদের জেলার গর্ব। সামান্য অভাব যেন কোনোদিনও তাদের স্বপ্নের পথে বাধা না হয়ে দাঁড়ায়—আমরা সেই দায়িত্ব নিয়েছি। আজ তাকে এই ছোট্ট উপহার তুলে দিতে পেরে আমরা আনন্দিত। আমরা বিশ্বাস করি, আগামী দিনে সোনালি শুধু আরামবাগ বা হুগলিই নয়, গোটা দেশের নাম উজ্জ্বল করবে।

পুলিশের এই মানবিক পদক্ষেপ প্রমাণ করল অভাব প্রতিভার পথে বাঁধা নয়, যদি পাশে থাকে সহমর্মিতা ও ভালোবাসা। আগামী দিনে সোনালি যখন জাতীয় কিংবা আন্তর্জাতিক মঞ্চে পদক জিতবে, তখন তার প্রতিটি পদক্ষেপে থাকবে এই জুতোর ফিতেতে বাঁধা আশীর্বাদের ছোঁয়া।

Loading

Leave a Reply