শাশুড়ি ও বউমার দ্বৈরথ বাঙালি সমাজের বহু বাড়িতেই দেখা যায়। পান থেকে চুন খসলে বেধে যায় দক্ষযজ্ঞ। এই দৃশ্য আমাদের সকলের পরিচিত। তবে বাংলার ঘরে ঘরে বিপরীত চিত্রও রয়েছে। সেখানে শাশুড়ি ভার্সেস বউমা নয়, শাশুড়ি-বউমার জুটি। এমনই এক বঙ্গ জুটির হাতেই গড়ে উঠছে একের পর দুর্গা মূর্তি। মা দুর্গার মৃন্ময়ী রূপ দিয়েই সংসারের জোয়াল স্বাচ্ছন্দ্যে বয়ে নিয়ে চলেছেন আরামবাগের শাশুড়ি-বউমা জুটি। কথায় আছে যিনি রাঁধেন, তিনি চুলও বাঁধেন। এখানে অবশ্য যাঁরা হেঁশেল সামলান তাঁরা ঠাকুরও গড়েন। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ শক্তির সঞ্চার ঘটিয়েছিলেন দেবী দুর্গা। পুরাকাল থেকে তিনিই নারীশক্তির প্রতীক। দুর্গার বিভিন্ন রূপই আজকের নারীর মধ্যে প্রকট। মেয়েরা যে, কোনও অংশে পিছিয়ে নেই, তারই প্রমাণ দিয়ে চলেছেন আরামবাগের বলরামপুরের পদ্মাবতী দাস ও তাঁর বউমা পল্লবী দাস। এবার ২৫টি দুর্গাপ্রতিমা প্রাণ পাচ্ছে এই মহিলা শিল্পীদের হাতে। একসময় অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন স্বামী শ্রীকান্ত দাস। ঠাকুর গড়ার কারখানা উঠে যাওয়ার উপক্রম হয়। তখনই হাল ধরেন পদ্মাবতী। শুরু হয় ঠাকুর গড়া। পরে শাশুড়ির সাথ দেন বউমা। প্রথমে সংখ্যায় কম ছিল। এখন অবশ্য গোটা কারখানা ভর্তি। এখন নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই শাশুড়ি-বউমা জুটির। তাঁদের কল্পনা ও কারিগরি দক্ষতায় মৃন্ময়ী রূপে সেজে উঠেছেন মা উমা। পদ্মাবতী বলেন, স্বামীর অসুস্থতার কারণেই এই পেশায় আসা। ১২ বছর ধরে স্বামীর অসুস্থতার কারণে ঠাকুর গড়ার কারখানার হাল ধরেছি। স্বনির্ভরতার পথ দেখাতে মেয়েরাও পারে, সেটাই প্রমাণ করে চলেছেন পদ্মাবতী, পল্লবীরা। এলাকার মহিলাদের কাছেও এখন আইকন এই শাশুড়ি-বউমার জুটি। এরাই বাস্তবের উমা।
![]()




