ফিচার

শুদ্ধ মনে সরস্বতী আরাধনার উপাচার

জয় জয় দেবী চরাচর সারে কুচযুগ শোভিত মুক্তাহারে বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে ভগবতী ভারতী দেবী নমস্তে। বিদ্যার দেবী বীণাপাণি দেবী সরস্বতী আরাধনা করার জন্য আমাদের মূলত নিজের মনকে শুদ্ধ করে নেওয়া দরকার। আর তার পরেই আপনার মনের মত করে সরস্বতী মাতার আরাধনা করা উচিত। মাঘ মাসে বসন্ত পঞ্চমী তে বীণাপাণি দেবীর আরাধনা করা হয়। সৃষ্টি কর্তা ব্রম্ভার সহধর্মিনী সরস্বতী, বিষ্ণু পত্নী লক্ষ্মী ও মহেশ্বর জায়া পার্বতীর সাথে ত্রিদেবী নামে পরিচিত। সরস্বতীর তিন গুণের মধ্যে তিনি সত্য গুণময়। অনন্ত জ্ঞানেশ্বরী বাক শক্তির প্রতীক বাগদেবী। গতিময় জ্ঞানের জন্য তাঁকে ঋকবেদের নদী রূপে কল্পনা করা হয়। তিনি বিদ্যা, বুদ্ধি, সংগীত ও সৌন্দর্যের দেবী। এজন্যই শিক্ষার্থীরা তার কাছে বুদ্ধি বিকশিত হওয়ার জন্য বই খাতা এবং আঁকার খাতা, সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র দিয়ে থাকে।

প্রতিটি ব্যক্তির সাথে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই প্রয়োজন সরস্বতী পুজোর এই দিনে প্রভাতে স্নান করে দেবীর আরাধনা করা। দেহকে শুদ্ধ করার জন্য জলের মধ্যে নিম পাতা এবং তুলসী পাতা দিয়ে স্নান করা প্রয়োজন। এছাড়া স্নানের আগে দেহ শুদ্ধির উপকরণ হিসেবে কাঁচা হলুদ এবং নিম পাতা বেটে গায়ে লাগানো উচিত। এতে শরীরের সাথে সাথে দেহ ত্বক কিছুটা পরিষ্কার হয়। এরপর শুদ্ধ বস্ত্র পরিধান করে পুজোর ঘরে ঢুকতে হয়। তবে সরস্বতী দেবীর হলুদ এবং সাদা রং পছন্দের জন্য এই রং গুলির বস্ত্র আপনি ব্যবহার করতে পারেন। এরপর পুজোর উপকরণ সাজিয়ে নিয়ে পুজোয় বসা উচিত। পুজোর উপকরণ হিসেবে অবশ্যই যা প্রয়োজন তা হল একটি সাদা কাপড়, পলাশ ফুল, বিভিন্ন সাদা ফুল, আম্র পত্র, বেলপাতা, কাঁচা হলুদ, সিঁদুর, ধান, দূর্বা, ৫ ফল এবং যার মধ্যে কলা এবং নারকেল আবশ্যক। পান পাতা, ধূপকাঠি, খাগের কলম এবং দোয়াত। এরপর আপনি পুজোর ঘর সুন্দর করে পরিষ্কার করে আলপনা দিয়ে একটি চৌকির মধ্যে স্বেত বস্ত্র বিছিয়ে বিদ্যাদেবীকে আসনে বসান। তারপর ঘটের উপর আম্রপল্লব দিয়ে সজ্জিত করে দেবীর আরাধনা শুরু করুন। যেকোনো পুজোর আগে সিদ্ধিদাতা গণেশকে আরাধনা করতে হয়। আর তারপর সরস্বতী মায়ের বন্দনা শুরু করুন। মন্ত্র হিসেবে এই মন্ত্র ব্যবহার করতে পারেন -সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে বিশ্বরূপে বিশালক্ষী বিদ্যাংদেহি নমস্তুতে।

Loading

Leave a Reply