জেলা

বছরে একদিনই মেলে মেয়েদের হস্টেলে ঢোকার অনুমতি, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে তত্ত্ব উৎসব ঘিরে আগাম ভ্যালেন্টাইন্স ডের ছবি

বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো, যার জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন সকলে। কিন্তু ব্যতিক্রম বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। আসলে এখানকার শ্রেষ্ঠ উৎসব বাগদেবীর আরাধনা৷ সরস্বতী পূজার পরের দিন কার্যত আগাম ভ্যালেন্টাইন্স ডেতে মাতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের ছাত্রছাত্রীরা। কারণ সারা বছর ছাত্রীদের হোস্টেলে যাওয়া তো দূরের কথা, সেই দিকে তাকানো যেন অপরাধ। কর্তৃপক্ষের কাছে খবর গেলে রেহাই মিলবে না। কিন্তু বাগদেবীর কৃপায় শুধুমাত্র এই একটি দিনের জন্যই মেলে ছাড়পত্র। এদিন ছাত্রীদের হস্টেলের ছাত্ররা এবং ছাত্রদের হোস্টেলের ছাত্রীরা তত্ত্বের ডালা সাজিয়ে হাজির হন।

তত্ত্ব বিনিময়ের মাধ্যমে আদান-প্রদান হয় লাল গোলাপ। সঙ্গে অভিনব প্রেমালাপ। স্বীকৃত নাম না থাকলেও এই উৎসব তত্ত্ব উৎসব নামেই পরিচিত। ছাত্র ও ছাত্রীদের হস্টেল মিলিয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে ১১টি হস্টেল। প্রতি হস্টেলের আবাসিকরা সরস্বতী পুজো করেন। ছাত্র-ছাত্রীদের হাতেই সেজে ওঠে থিমের মণ্ডপ। পুজোর এর পরদিন প্রতিটি হস্টেলই আরও রঙিন সাজে সেজে ওঠে। বেশিরভাগ ছাত্র ছাত্রী এই দিনটির জন্য সারা বছর মুখিয়ে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ৯০ দশক থেকে তত্ত্ব উৎসবের সূচনা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ছাত্রদের অরবিন্দ, নেতাজি, রবীন্দ্র, বিবেকানন্দ হস্টেল থেকে ছাত্রীদের সরোজিনী, নিবেদিতা, প্রীতিলতা প্রভৃতি হস্টেলে ছিল রঙিন ছবি।

ছাত্রদের পরনে পাঞ্জাবি, ছাত্রীদের পরনে ছিল শাড়ি। সাদা গোলাপ সুসজ্জিত তত্ত্বের ডালি নিয়ে ছাত্ররা হাজির হয়েছেন ছাত্রীদের হস্টেলে। আবার ছাত্রীরাও হাজির হয়েছেন ছাত্রদের হস্টেলে। নানা ধরনের বাদ্যবাজনা স্থান পায় এখানে। থাকে চিঠি। সেই চিঠি হস্টেলে ঢুকে পাঠ করেন ছাত্রছাত্রীরা। ছাত্ররা যেমন ছাত্রীদের আপ্যায়ন করেন, তেমনই ছাত্রীরা ছাত্রদের আপ্যায়ন করেন। মিষ্টিমুখ করানো থেকে আবৃত্তি গান সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও মেতে ওঠেন পড়ুয়ারা। কোথাও নিজেদের মধ্যে মালাবদলেরও আয়োজন করা হয়। আনন্দের রঙিন ছবি ফুটে ওঠে হস্টেলে হস্টেলে।

Loading

Leave a Reply