জেলা

সন্তানলাভের আশায় নিজে দাঁড়িয়ে থেকে স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে দিলেন স্ত্রী

বিয়ের পর থেকে ২১ বছর পেরিয়ে গেলেও সন্তান লাভ হয়নি জামালপুরের দম্পতির। তাই সন্তান লাভের আশা পূরণের জন্য নিজে দাঁড়িয়ে থেকে স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে দিলেন প্রথমপক্ষের স্ত্রী। কয়েকদিন আগেই এই বিয়ের পর নববধূ পারভিন খাতুনকে সঙ্গে নিয়েই আবুজাহির সাহানার প্রথম পক্ষের স্ত্রী সাহিলা বেগম হাসিমুখে সংসার সামলাচ্ছেন। রোজাও পালন করছেন। নজিরবিহীন এই ঘটনায় স্তম্ভিত জামালপুর থানার শাহহোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দারা। শুধুমাত্র মাতৃত্বের স্বাদ পূরণের জন্য সাহিলা বেগমের ত্যাগকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন সকলে।

জামালপুরের জ্যোৎশ্রীরাম পঞ্চায়েত এলাকার প্রত্যন্ত গ্রাম শাহহোসেনপুর। দামোদর তীরবর্তী এই গ্রামের শেখ পাড়ায় বাড়ি বছর ৪২-এর আবুজাহির সাহানার। ২১ বছর আগে পেশায় রাজমিস্ত্রি আবুজাহিরের সঙ্গে রায়না থানার মাঠনুরপুর গ্রামের তরুণী সাহিলার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাঁদের সংসার জীবন সুখেই কাটছিল। কিন্তু শারীরিক অক্ষমতার কারণে বিয়ের দীর্ঘদিন পরেও সাহিলা সন্তানের জন্ম দিতে না পারায় আবুজাহির মনকষ্টে দিন কাটাতেন। স্বামীর কষ্টে একইভাবে ব্যথিত হতেন সাহিলাও। শেষমেশ স্বামীর সন্তান লাভের আকাঙ্খা পূরণের জন্য সহিলা নিজেই এই নজিরহীন সিদ্ধান্ত নেন।

ধর্মীয় রীতিনীতি মেনে গত ১১ মে সোমবার পারভিন খাতুনের সঙ্গে দ্বিতীয়বার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন আবুজাহির। জামালপুরে বত্রিশবিঘা গ্রামে নববধূর বাপেরবাড়ি। ওই দিন সেখানে উপস্থিত থেকে সাহিলা নিজে দাঁড়িয়ে থেকে স্বামীর বিয়ে দেন। এনিয়ে সাহিলা বলেন, সন্তান লাভের জন্য অনেক ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়েছি। কিন্তু মা হতে পারিনি। সেই কারণে দুজনেই কষ্টে দিন কাটাতাম। তাই আমি নিজেই অন্য তরুণীর সঙ্গে স্বামীর বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই। পারভিন আমাকে নিজের দিদির মতোই ভালবাসে। পারভিনের গর্ভের সন্তানকেই নিজের সন্তান স্নেহে বড় করে তুলব।

নববধূ পারভিন বলেন, শ্বশুরবাড়িতে কোনও সমস্যা নেই। সুখেই সংসার জীবন কাটাছে। আবুজাহির বলেন, সন্তান লাভের আকাঙ্খা পূরণের জন্য প্রথম পক্ষের স্ত্রীর ইচ্ছাতেই বিয়ে করেছি। প্রতিবেশী শেখ লিয়াকত আলি ও জরিনা বিবি বলেন, শুধুমাত্র মা ডাক শোনার জন্য সাহিলা দৃষ্টান্ত তৈরি করল।

Loading

Leave a Reply