শিক্ষার আসল মানে শুধু অঙ্ক কষা বা বই পড়া নয়— জীবনের পাঠ শেখানো। আর সেই মানবিক শিক্ষারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত গড়ে তুলল হুগলির খানাকুলের মাজপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। ছোট্ট স্কুল প্রাঙ্গণেই খুলে গেল এক অভিনব দোকান, যেখানে মুনাফা নয়, বরং প্রতিটি শিশুর হাতে পৌঁছে যাচ্ছে জীবনের শিক্ষা।
শনিবার দোকানের উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস মুখার্জি। তাঁর কণ্ঠে ছিল একটাই বিশ্বাস— “ক্ষতি মানেই ভেঙে পড়া নয়। যদি এই দোকান থেকে আমাদের শিশুরা সঠিক শিক্ষা পায়, সেটাই আমাদের লাভ।”
এখানে বই, খাতা, ব্যাগ, পেন-পেন্সিল, রং পেন্সিল বা ছবি আঁকার খাতা মিলছে অর্ধেক দামে। তবে কেউ ধারে কিনলে দাম একটু বেশি— যাতে ছোট থেকেই শিশুরা বুঝতে শেখে নগদে আর ধারে কেনার পার্থক্য। টিফিনের সময় দোকান খুলছে, আর তা পরিচালনার দায়িত্বও নিয়েছে নিজেরাই ছাত্রছাত্রীরা। প্রথম দিন পঞ্চম শ্রেণির দুই ছাত্রী দোকান চালিয়ে দেখাল, কীভাবে সহপাঠীরা খুশি মনে সামগ্রী কিনছে।
বিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৪৭ জন ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে। এই ছোট উদ্যোগ তাদের চোখে যেন নতুন স্বপ্নের আলো। অভিভাবকেরাও আবেগে বলছেন, “আমাদের সন্তানরা শুধু পড়াশোনা নয়, জীবনের মূল্যবোধও শিখছে।”
একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়— যেখানে খাতা-কলমের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে ভালোবাসা, দায়িত্ববোধ আর জীবনের সত্যিকারের শিক্ষা। সত্যিই, এই দোকানের লাভের অঙ্ক কেবল টাকার খাতায় নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের হৃদয়ে।
![]()




