করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কে গোটা বিশ্ব। দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস। তবে স্বস্তির খবর এই রোগে মৃত্যু হার যথেষ্ট কম অন্যান্য রোগের তুলনায়। তাই এই রোগ থেকে বাঁচার জন্য আগে থেকে নিজের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে রাখা দরকার। তাই করোনা মহামারি মোকাবিলায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দ্য সিইও ম্যাগাজিন।
জিঙ্ক
আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, হার্ট এবং চোখকে সুস্থ রাখার জন্য বেশ ভূমিকা রাখে জিঙ্ক। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, জিঙ্ক একটি প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারী যা টি লিম্ফোসাইটস নামক রোগ প্রতিরোধক কোষ তৈরি করে মহামারির মতো রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। মাংস, শিমের বিচি ও ঝিনুকে জিঙ্কের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে।
ভিটামিন ডি
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর অন্যতম সহায়ক ভিটামিন ডি। এই ভিটামিন সকালের রোদে, ডিমের কুসুম, সালমন মাছ ও সামুদ্রিক সার্ডিন পোনা মাছে পাওয়া যায়। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি ভাইরাসজনিত সর্দি-কাশি রোগ হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে।
পর্যাপ্ত ঘুম
মানুষের দৈনন্দিন কার্যক্রম ঠিক মতো সম্পন্ন করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, প্রতিদিন সাত থেকে আট ঘণ্টা না ঘুমালে যে কোনো রোগ খুব সহজেই শরীরে বাসা বাঁধতে পারে। ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশন রিপোর্ট বলছে, অতিরিক্ত ঘুম আমাদের অগত্যা অসুস্থ হওয়ার হাত থেকে না বাঁচালেও, পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাতে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে এবং ঠান্ডা বা ফ্লুতে আক্রান্ত হতে পারে।
অতিরিক্ত চিনি ও মদপান পরিহার
এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে অতিরিক্ত চিনি খাওয়া এবং মদপান এড়ানো গেলে খুব সহজেই ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির ৫০ গ্রাম বা ১০ চা-চামচের বেশি চিনি খাওয়া উচিত না। এতে উচ্চ রক্তচাপ, প্রদাহ, ওজন বৃদ্ধি, ডায়াবেটিস, ফ্যাটি লিভারের রোগসহ হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
রসুন
ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিরোধে রসুন একটি শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকের কাজ করে। রসুনে অ্যালিসিন নামক একটি যৌগ থাকে যা শরীরে সালফার উৎপন্ন করে। ফলে শ্বেত রক্তকণিকার রোগ-প্রতিরোধ প্রতিক্রিয়া বাড়ায়। গবেষকদের মত, খালি পেটে রসুন গ্রহণ হাইপারটেনশন ও স্ট্রেস কমাতে সহায়তা করে। পেটে হজমের সমস্যা থাকলে তাও দূর করে। এছাড়া এটি স্ট্রেস থেকে পেটে গ্যাসের সমস্যা দূরীকরণে, পেটের অন্যান্য গণ্ডগোলজনিত অসুখ যেমন ডায়রিয়া সারাতে, শরীরের রক্ত পরিশুদ্ধ করণে ও লিভারের ফাংশন ভালো রাখতে ভূমিকা রাখরসুন পুরুষের যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূণ ভূমিকা রাখে।
মধু
মধুর উপকারিতা সকলেরই জানা। এর গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবে না। মধু শরীরের রোগ প্রতিরোধশক্তি বাড়ায় এবং শরীরের ভেতরে ও বাইরে যেকোনো ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষমতাও জোগান দেয়।
মধুতে আছে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধকারী উপাদান, যা অনাকাঙ্ক্ষিত সংক্রমণ থেকে দেহকে রক্ষা করে। বিভিন্ন ভাইরাসের আক্রমণে বিভিন্ন রোগ প্রায়ই দেহকে দুর্বল করে দেয়। এসব ভাইরাস প্রতিরোধে মধু খুবই কার্যকর।