দেশ

গোমূত্র পান নিয়ে স্বয়ং মুখ খুললেন তসলিমা নাসরিন।

যখন সমগ্র ভারতে বিজেপির গোমূত্র পানের নিদান নিয়ে সারাদেশ সরব, সেই সময় এবার গোমূত্র পান নিয়ে মুখ খুললেন ভারতপ্রেমী বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তার ফেসবুক পেজে তিনি অক্ষয় কুমারের গোমূত্র পান নিয়ে লেখালিখি পোস্ট করলেন। কি বলছেন তসলিমা নাসরিন দেখে নিন -“বলিউড তারকা অক্ষয় কুমার সুস্বাস্থ্যের অধিকারী। খুব ফিট যাকে বলে। অক্ষয় কুমার জানিয়েছেন তিনি প্রতিদিন গোমূত্র পান করেন। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র থেকেই প্রেরণা পেয়েছেন, জানিয়েছেন। আয়ুর্বেদ ১০০০ বছর আগের প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি। আয়ুর্বেদে গোমূত্রের উপকারিতার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে গরু যখন মাঠে খায়, তখন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নানারকম লতা পাতা খায়। সেগুলো কিছুটা তো প্রস্রাবে পাওয়া যায়ই। গর্ভবতী গাভীর প্রস্রাবেও হরমোন এবং খনিজ দুই-ই পাওয়া যায়। মিনারেল বা খনিজ পদার্থ মানুষের শরীরে থাকা দরকার, সে কারণেই গোমূত্র পান করলেই শরীরে খনিজের অভাব দূর হয়, পুষ্টি যা দরকার, তাও গোমূত্রেই মেলে।

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2135730903238023&id=100004034030498

আয়ুর্বেদ বলছে, সকালে খালি পেটে গোমূত্র পান করলে বিভিন্ন অসুখ সেরে যায়, এর মধ্যে আছে কুষ্ঠ রোগ, ডায়বেটিস, টিউমার, যক্ষা, পেটের অসুখ বিসুখ, ক্যান্সার। আয়ুর্বেদ আরও দাবি করছে গোমূত্র যদি কালো নুন, দই এবং ঘি’র সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়া হয়, তাহলে জ্বর সারে । রক্তশূন্যতা সারানোর ওষুধ ত্রিফলা, গোমূত্র আর গরুর দুধ। আয়ুর্বেদ আরও বলছে, যে, গোমূত্র শরীরের ভেতরের সব টক্সিন বের করে দেয়, সুতরাং কোনও ক্রনিক অসুখের ঝুঁকি থাকে না। তাছাড়া গোমূত্র দিয়ে সাবান আর শ্যাম্পুও তৈরি করা যায়। এসব আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের দাবি।

কিন্তু বিজ্ঞান কী বলছে? বলছে আয়ুর্বেদের দাবিগুলোর কোনও প্রমাণ মেলেনি। বলছে গোমূত্রে সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ক্রিয়েটিনিন, ফসফরাস, এপিথেলিয়াল সেল পাওয়া যায়, কিন্তু গোমূত্র মানুষের অসুখ বিসুখ সারায় না। খনিজ থাকার ফলে গোমূত্র মাটির জন্য উপকারী হতে পারে, কিন্তু মানুষের জন্য নয়।

অক্ষয় কুমারের গোমূত্রে বিশ্বাস। তাঁর ভক্তকুল ইতিমধ্যে বিশ্বাস করতে শুরু করেছে অক্ষয়ের সুস্বাস্থ্যের কারণ গোমূত্র। আসলে তাঁর সুস্বাস্থ্যের পেছনে আছে তাঁর ভালো জিন, ভালো এক্সারসাইজ, ভালো ডায়েট। কিন্তু ক্রেডিট যাচ্ছে গোমূত্রে। কিছু লোক উটের প্রস্রাবও পান করে, তাদের বিশ্বাস ওই প্রস্রাব তাদের রোগ সারাবে। এ আমরা দেখে অভ্যস্ত যে, ডাক্তার রোগ সারাবার পর সব ক্রেডিট মানুষ দেয় ঈশ্বর, ভগবান , আল্লাহকে । খুব সম্ভবত ঈশ্বর, ভগবান , আল্লাহর অস্তিত্ব নেই, কারণ তাদের অস্তিত্বের আজও কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

মানুষ সর্বগুণে গুণান্বিত নয়। কারও একদিকে বুদ্ধি খেলে, আরেকদিকে খেলে না। যেদিকে বিশ্বাস আছে, সেদিকে সাধারণত বুদ্ধির ছিটেফোঁটা দেখতে পাওয়া যায় না। তারপরও যুক্তিবুদ্ধিহীনবিশ্বাস জিনিসটা আদিকাল থেকেই আছে। হয়তো আরও বহু শতাব্দি থাকবে।” আসল কথা হল এই যে বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর। কিন্তু যে কোন জিনিসই যুক্তি-তর্ক দিয়ে তবেই বিশ্বাস করে মান্য করা উচিত। হঠাৎ করে কোন সেলিব্রেটি কিছু বলে দিলে সেটা মান্য করা বাস্তবসম্মত বলে মনে করা হয় না। প্রকাশ্য জায়গায় সেলিব্রেটিরা অর্থের ভিত্তিতে প্রচুর পরিমাণ অ্যাডভার্টাইজমেন্ট করে, তাই যেকোনো জিনিস যাচাই করে তারপরেই ব্যবহার করা উচিত।

Sponsor Ad

Leave a ReplyCancel reply