টিভিতে ক্রাইম সিরিয়াল দেখার পরই মেমারির করন্দা গ্রামের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শুভ মণ্ডলকে খুনের ছক কষে ধৃত দুই নাবালক বন্ধু। সেইমতো শুভকে নির্জন জায়গায় ডেকে নিয়ে গিয়ে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। খুনের ১১ দিন পর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। বৃহস্পতিবার স্থানীয় এক বাসিন্দা ঝোপের পাশ থেকে দুর্গন্ধ পান। তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে পুলিস শুভর পচা-গলা দেহ উদ্ধার করে।
তবে, ধৃত দুই কিশোরের মনোভাবে কার্যত হতবাক পুলিস। বন্ধুকে খুন করে বিন্দুমাত্র অনুতপ্ত নয় তারা। জেরায় কীভাবে তারা শুভকে খুন করেছে তা পুলিসকে ঠান্ডা মাথায় জানিয়েছে দুই কিশোর। খুন করার পর ১০ দিন তারা বাড়িতে ছিল। কিন্তু, তাদের আচরণে বিন্দুমাত্র অস্বাভাবিকতা দেখতে পাননি পরিবারের লোকজন। তাদের আচরণ একেবারে স্বাভাবিক ছিল। অন্যান্য দিনের মতো তারা আড্ডা দিয়েছে। বন্ধুদের সঙ্গে গল্পগুজবও করেছে। প্রতিবেশীরাও দুই কিশোরের আচরণে কোনওরকম ফারাক পায়নি। সেজন্যই শুভকে যে তারা খুন করতে পারে তা পুলিস বুঝতে পারেনি। তবে, গল্পের ছলে শুভর এক বন্ধুকে তারা খুনের কথা জানায়। সেই বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে খুনে দুই কিশোরের জড়িত থাকার কথা জানতে পারে পুলিস। তবে, খুনে শুভর সহপাঠীর কোনও ভূমিকা নেই বলে জানতে পেরেছে পুলিস।
ধৃতদের মধ্যে মূল অভিযুক্তের সঙ্গীর বাড়ি মেমারি থানার পালশিটের দুলেপাড়ায়। সে গুজরাতের সুরাটে গয়নার দোকানে কাজ করত। কিছুদিন আগে সে বাড়ি ফেরে। মূল অভিযুক্তের সঙ্গে তার আগে থেকেই বন্ধুত্ব ছিল। বন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়েই সে শুভকে খুনে জড়িয়ে পড়ে। পুলিসের দাবি, অনলাইন গেম খেলা নিয়ে বিরোধের জেরে শুভকে খুন করা হয়েছে। বারবার শুভর কাছে হেরে গিয়ে মূল অভিয়ুক্ত খুনের পরিকল্পনা করে বলে জেনেছে পুলিস। যদিও তা মানতে নারাজ মৃতের পরিবারের লোকজন। তাদের দাবি, স্কুলে সহপাঠীদের সঙ্গে বিবাদের জেরে নাতিকে খুন করা হতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, এর পিছনে অন্য কোনও কারণ থাকতে পারে। ঘটনায় দুই কিশোরের সঙ্গে আরও কয়েকজন জড়িত থাকতে পারে। যেভাবে মৃতদেহটি টেনে নিয়ে সেচ খালের পাশে ফেলা হয়েছে, তা দুই কিশোরের পক্ষে সম্ভব নয় বলে মনে করছেন বাসিন্দারা।