কলকাতায় এ-পর্যন্ত দু’জনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে এবং সেই দু’জনই সম্প্রতি বিলেত থেকে ফিরে এসেছেন। তার জেরে শহরবাসীর মনে সম্প্রতি বিদেশফেরত নাগরিকদের নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সূত্রের খবর, বিদেশ ঘুরে আসা নয় চিন্তা বাড়াচ্ছেন গত দু’সপ্তাহে কলকাতায় আসা ১৪ হাজার বিদেশি নাগরিক। তাঁদের মধ্যে অনেকে চিন, ইউরোপ বা উপসাগরীয় দেশগুলি থেকে এসেছেন।
সরকারি তথ্য জানাচ্ছে, শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্যে ১৯,৫০০ মানুষ বাড়িতে স্বেচ্ছাবন্দি হয়ে রয়েছেন। তাঁদের অধিকাংশই বিদেশফেরত। কিন্তু ১ মার্চ থেকে ১৭ মার্চের মধ্যে যে-সব বিদেশি কলকাতায় এসেছেন, তাঁরা কোথায় আছেন, তার যথাযথ তথ্য রাজ্য সরকারের কাছে নেই।
নবান্নের স্বরাষ্ট্র দফতরের কর্তারা জানান, এই তথ্য রাখার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীন বিদেশি নিবন্ধীকরণ বিভাগের। তারাই মূলত শহরে আসা বিদেশিদের খোঁজখবর রাখে। যদিও বিদেশি নিবন্ধীকরণ বিভাগের কর্তারা জানাচ্ছেন, কোনও বিদেশির ভিসা ফর্মে শহরে থাকার যে-ঠিকানা থাকে, সেটির সঙ্গে সবিস্তার তালিকা সরকারকে দেওয়া হয়েছে। বিদেশিরা কলকাতায় এসে কোথায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তা দেখতে হলে পুলিশকেই মাঠে নামতে হবে। কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরে কলকাতায় আসা বিদেশিদের প্রতি নির্দিষ্ট নির্দেশিকা দিয়েছিল কেন্দ্র। তাতে জানানো হয়েছে, যে-সব দেশে করোনা সংক্রমণ মাত্রাছাড়া, সেখানকার নাগরিকেরা এই সময়ে শহরে এলে বাধ্যতামূলক ভাবে ১৪ দিন স্বেচ্ছাবন্দি থাকতে হবে। অন্য দেশের নাগরিকদেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। করোনার উপসর্গ দেখা দিলে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নবান্নের হিসেব অনুযায়ী ১ থেকে ১৭ মার্চের মধ্যে ১৪,০৭৫ জন বিদেশি নাগরিক কলকাতায় নেমেছেন। অনেকে ফিরে গিয়েছেন। অনেকে শহরে আছেন বা অন্যত্র গিয়েছেন। ইরান থেকে কোনও নাগরিক আসেননি। সব চেয়ে বেশি (৮২৫৯ জন) মানুষ এসেছেন বাংলাদেশ থেকে। আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা থেকে কয়েকশো বিদেশি কলকাতায় নেমেছেন। তবে উল্লেখযোগ্য ভাবে ১৪ মার্চের পর থেকে শহরে বিদেশি নাগরিকদের আসার সংখ্যা অনেকটা কমে গিয়েছে। সংখ্যা কমলেও চিন্তামুক্ত নয় নবান্ন।