বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ভয়ঙ্কর অভিযোগ তোলেন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন রাজ্যে মৃতদেহের স্তুপ তৈরি হচ্ছে। ১৫ টি ডেড বডি হাসপাতালে পড়ে রয়েছে। এই রকম চিঠিও তার কাছে আছে। পাশাপাশি তিনি অভিযোগ করেন তার দলের সাংসদরা দিল্লি থেকে ফিরে নিজগৃহে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরে যখন মানুষকে সাহায্য করার জন্য বাইরে বের হচ্ছেন তখন সরকার পুলিশ দিয়ে তাদেরকে পুনরায় কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। উত্তরবঙ্গের একাধিক সংসদ এর ক্ষেত্রে এই ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকার করোনা মোকাবিলায় চূড়ান্ত ব্যর্থ বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তার দলের নেতাকর্মীদের লকডাউনের সময় বেছে বেছে কেস দেওয়া হচ্ছে। এই সবকিছুর বিরুদ্ধে রবিবার তিনি প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেন। তিনি জানিয়েছিলেন প্রত্যেকে নিজের বাড়ির সামনে বসে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে।
আরামবাগ বিজেপি রবিবার এই কর্মসূচি পালন করল। যদিও বাড়িতে বসে কতজন এই কর্মসূচি পালন করেছে তা জানা না গেলেও আরামবাগ ২৪ নম্বর বন্দর রুটে বিজেপির যে দলীয় কার্যালয় তার সামনে দূরত্ব বজায় রেখেই বেশকিছু বিজেপি নেতা কর্মী প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শামিল হয়। তাদের সামনে ছিল একটি করে ঝুড়ব।প্রতি ঝুড়িতে একটি করে সবজি ও সরকারের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ লেখা পোস্টার।সেখানে লেখা ছিল চাল চোরদের সরকার আর নেই দরকার, আবার বা কোন পোস্টার এ অভিযোগ তোলা হয়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃতের সংখ্যা কেন গোপন করা হচ্ছে তৃণমূল সরকার জবাব দাও? এইরকমই নানান অভিযোগ নিয়ে এদিন তারা এই কর্মসূচি পালন করে। এই প্রসঙ্গে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন কেবলমাত্র পৌর এলাকা নয়, আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সমস্ত কর্মী বিক্ষোভ দেখিয়েছে। বিজেপি কর্মীরা তাদের বাড়ির দরজার সামনে ব্যানার নিয়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছে। সেখানে বর্তমান সরকার রাজ্যের কঠিন পরিস্থিতিতেও যেভাবে নোংরা রাজনীতি করছে তা তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি বিমান বাবু বলেন তারা প্রতিটি এলাকাতেই যতটা সম্ভব মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই করছেন। আরামবাগ পৌর এলাকায় একটানা কমিউনিটি কিচেন চলছে। সেখানে প্রতিদিন 600 থেকে হাজার লোককে খাওয়ানো হচ্ছে। অথচ বর্তমান শাসকদল সংবাদ মাধ্যমের নাম তোলার জন্য দু-তিনদিন রান্নাঘর চালিয়ে তা বন্ধ করে দিলেন। আসলে বিজেপি প্রচার নয় মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে চায়। আর তৃণমূল সেই কাজটি সঠিকভাবে করতে দিচ্ছে না।
কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল রাজ্যে না এলে এখন যে পরিমাণ টেস্ট হচ্ছে তাও হতো না। মৃতের সংখ্যা বেড়ে এক লাফে কেন্দ্রের ঠেলায় 57 হয়েছে। এখান থেকেই প্রমাণ হয়ে যায় সরকার এতদিন তথ্য গোপন করে রেখেছিল। যদিও তৃণমূল বলছে এখন সমস্ত দলীয় কার্যালয় বন্ধ। বিজেপি কার্যালয়ের গেটে চাবি দিয়ে কার্যালয়ের সামনে যেভাবে জমায়েত করেছে এসময় তা হওয়া কাম্য ছিল না। পাশাপাশি তৃণমূলের অভিযোগ কেন্দ্র রাজ্যকে কোন সহযোগিতা করেনি। যে কিট দিয়েছিল তাও ত্রুটিপূর্ণ। কেন্দ্রের নির্দেশে র্যাপিড টেস্ট বন্ধ আছে। কিন্তু রাজ্য সরকার নিজস্ব উদ্যোগে কীট সংগ্রহ করেছিল। তা দিয়ে এখন প্রতিদিন প্রায় এক হাজারেরও বেশি মানুষের পরীক্ষা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এবার কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের উত্তাপ আরামবাগেও ছড়িয়ে পড়লে বলেই মনে করছেন রাজনীতিবিদরা।