স্ত্রীকে খুন করার অপরাধে ক্রমাগত পুলিশি হয়রানির পর জেলও খাটতে হয়েছে। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার সমস্ত চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছিল ওড়িশার পাতকুয়া চাউলিয়া গ্রামের যুবক অভয় সুতার। তবে জেল থেকে ছাড়া পেয়ে স্ত্রীকে খুঁজে বের করার পণ করেছিলেন তার স্বামী তথা আইনের চোখে খুনি। সাত বছর ধরে নাওয়া-খাওয়া ভুলে শুরু করেন গোয়েন্দাগিরি। তবে তার এই পথ অবশ্য সহজ ছিল না। স্ত্রীর খোঁজে এই গোয়েন্দাগিরি করতে গিয়ে প্রফেশনাল গোয়েন্দাদের মতোই কখনও সেজেছেন পাগল।
বিভিন্ন ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন ওড়িশার নানা তীর্থক্ষেত্র থেকে গ্রামে গ্রামে। তবে বিফলে যায়নি তাঁর পরিশ্রম। যে স্ত্রীকে খুন করার অপরাধে তাকে জেল খাটতে হয়েছিল সেই স্ত্রীকেই জীবিত অবস্থায় খুঁজে পেয়ে সটান চলে যান থানায়। এটা গল্প কাহিনীর মতো শোনালেও কোনও সিনেমার গল্প নয় বাস্তব সত্য। ২০১৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পার্শ্ববর্তী সামাগোলা গ্রামের যুবতী ইতিশ্রী মোহরানাকে বিয়ে করেছিলেন অভয়। বেশ ঘটা করেই তাদের বিয়ের অনুষ্ঠান হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের মাস টিনেক পর আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান ইতিশ্রী। নিখোঁজ ডায়েরিও করেন অভয়। এই ঘটনায় গ্রামে শোরগোল পড়ে যায়। যদিও ইতিশ্রীর বাবা পালটা অভয়ের নামে মেয়েকে পণের দাবিতে খুন করার অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি পুলিশকে জানান মেয়েকে খুন করে দেহ লোপাট করে দিয়েছেন অভয়। এর পরেই পুলিশ অভয়কে গ্রেপ্তার করে। তার জেলও হয়ে যায়। জামিন পেয়ে স্ত্রীকে খুঁজে বের করতে বাড়ি ছাড়েন অভয়।
কয়েকদিন আগেই ওড়িশার কেন্দ্রপাড়া গ্রামে ঘুরতে ঘুরতে স্ত্রীকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন তিনি। ছোটবেলার প্রেমিক রাজীব মোহানার সঙ্গে দিব্যি ঘর বেঁধেছেন অভয়ের স্ত্রী ইতিশ্রী। এরপর কেন্দ্রপাড়া মহকুমা আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন রাজীব ও ইতিশ্রী। পুলিশের কাছে ইতিশ্রী জানিয়েছেন, রাজীবের সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। পরিবারের লোক তার আপত্তিতেই অভয়ের সঙ্গে বিয়ে দেন। তাই স্বেচ্ছায় তিনি অভয়ের বাড়ি ছেড়েছিলেন।