বিশ্ব

সন্তানদের বাঁচানোর অপরাধে গ্রেপ্তার মা, বেনজির আইন উত্তর কোরিয়ায়

বাড়িতে আচমকাই আগুন লেগে যায়। তাই আগুন লাগার ঘটনা দিকেই দ্রুত রুদ্ধশ্বাস দৌড়ে এসে দুই সন্তানকে বাঁচান দুই মা। ঘরের অন্যান্য জিনিসের মধ্যে দেওয়ালে টাঙানো ছিল দুই রাষ্ট্রনেতার ছবি। ওই দুই রাষ্ট্রনেতা কিম ইল সাং এবং কিম জং ইলের ছবিগুলি রক্ষা করার কথা মাথায় ছিল না দুই মায়ের। কারণ তাদের সন্তানকে পাঠানোই তখন তাদের কাছে প্রাধান্য পেয়েছিল। এটাই তো স্বাভাবিক নিয়মে মায়েদের কর্তব্য হওয়া উচিত। কিন্তু রাষ্ট্রের চোখে ওই মায়েরা অপরাধী। কারণ তারা দুই রাষ্ট্রনায়কের ছবি না বাঁচিয়ে তাদের সন্তানদের বাঁচিয়েছেন। আইন অনুযায়ী এই ‘অপরাধের’ জন্য সশ্রম কারাদণ্ডের মুখে পড়তে হতে পারে ওই মায়েদের। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। কারণ দেশটা যে উত্তর কোরিয়া। কিম জং উনের দেশ। তাই সেখানকার আইন-কানুনও একেবারেই অন্যরকম এককথায় বেনজির। সেখানে রাষ্ট্রনায়কের ছবি বাঁচাতে গিয়ে কেউ যদি জীবন হারান, তবে দেশবাসীর চোখে তিনি একদম হিরো। ঘটনাটি নর্থ হেমগঙ্গ প্রদেশের।

সেখানে অনসং কাউন্টির বাড়িতে দুই পরিবারের বাস। দুই পরিবারের মা-বাবাই কাজে বাইরে গিয়েছিলেন। দুটি বাচ্চা বাড়িতে ছিল। বাড়ি থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে দৌড়ে আসেন বাবা-মা। বাচ্চা দুটোকে উদ্ধার করা গেলেও বাঁচানো যায়নি উত্তর কোরিয়ার প্রাক্তন রাষ্ট্রনায়কদের ছবি। খবর পেয়ে তদন্ত শুরু করে নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রক। গ্রেপ্তার করা হয় দুই মাকে। তারা দোষী সাব্যস্ত হলে দীর্ঘ কারাবাস হতে পারে। কারণ নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি বাড়িতে প্রাক্তন রাষ্ট্রনেতা কিম জং ইল ও কিম ইল সাংয়ের ছবি রাখা বাধ্যতামূলক যে। নিয়ম পালন করছেন কি না দেখতে পারি বাড়ি চলে সহকারি পরিদর্শন। শুধু বাড়ি নয়, দেশের সবকটি স্কুল, রেলস্টেশন,  সাবওয়ে সর্বত্রই প্রাক্তন রাষ্ট্রনেতাদের ছবি রাখা বাধ্যতামূলক। এবং তা যথেষ্ট সম্মান ও যত্ন করে রাখতে হবে। উত্তর কোরিয়ার এই নিয়মের ভাবেই অভিযুক্ত হয়েছেন দুই সন্তানের জীবন বাঁচানো মায়েরা।

Loading

Leave a Reply