জেলা রাজ্য

সিঙ্গুরে কৃষি বিলের সমর্থনে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন তারকা সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, উত্তেজনা

যেই মাটিতে গড়ার টানে বিদায় নিয়েছে বাম, আসার টানে সেই মাটিকেই বেছে নিয়েছে রাম!’ সত্যি শুনতে যেন অবাক লাগছেই। হ্যাঁ এটা একবারই সত্যিই হুগলির সিঙ্গুরের ক্ষেত্রে! সিঙ্গুর মানেই জমি আন্দোলন! সিঙ্গুর মানেই ৬০০ বনাম ৪০০-র লড়াই! সিঙ্গুর মানেই গুলির শব্দ, লাঠির ঘা, রাতজাগা আন্দোলন। সিঙ্গুরে শিল্প গড়ার টানে বাংলায় বামেদের ৩৪বছরের শাসনের অবসান হয়েছে। এরপর টানা প্রায় ১দশকের বেশি আইনি লড়াইয়ে সিঙ্গুরের চাষের জমি ফেরত পেয়েছে চাষীরা। বর্তমানে সিঙ্গুর আন্দোলনের আর সেভাবে কোনও গুরুত্ব নেই। তবে গুরুত্ব আছে রাজনীতির আঙিনায়। রাজনীতি যতদিন থাকবে সিঙ্গর ইস্যুও বোধহয় ততদিনই থাকবে। ২০১১ সালে নির্বাচনে সিঙ্গুর আন্দোলনকে সামনে রেখেই এরাজ্যে জোড়া ফুল ফোটে। আসন্ন ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের বৈতরনী পার করতে সিঙ্গুরকে হাতিয়ার করে বাংলায় পদ্মফুল ফোটাতে চাইছে গেরুয়া শিবির। তবে বাধ সেঁধেছে কেন্দ্রের পাশ করা নয় কৃষি বিল। কেন্দ্রের নতুন এই কৃষি বিলের প্রতিবাদে সারা দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু হয়েছে। সেই আন্দোলনের জাঁতাকলে পড়ার আগেই সিঙ্গুর যেন দলকে দূরে না সরায় তাই ময়দানে নেমে পড়ল বিজেপি। সোমবার কৃষি বিলের সমর্থনে সিঙ্গুরে মিছিলের আয়োজন করে বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলা।

যেখানে উপস্থিত ছিলেন হুগলীর সাংসদ লকেট চ্যাটার্জী, পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতিমর্য় সিং মাহাতো, জেলা সভাপতি গৌতম চ্যাটার্জী সহ স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বরা। দুপুর ৩টে নাগাদ সিঙ্গুরে টাটা অধিগৃহীত জমি প্রাঙ্গন থেকে মিছিল শুরু হয়। গোপালনগর হয়ে মিছিল সিঙ্গুর থানার সামনে গিয়ে সমাপ্ত হয়। সেখানে একটি সভাও করে বিজেপি। তবে মিছিলের পথে বিজেপির এই হেভিওয়েট নেতৃত্বদের কালো পতাকা দেখায় কৃষক ও তৃণমূল। বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকায় সেভাবে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

এ বিষয়ে তারকা সাংসদ লকেট চ্যাটার্জী বলেন, এই সিঙ্গুর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্থান হয়েছিল। আর এই সিঙ্গুরই হবে তাঁর পতনের কারন। পাশাপাশি কৃষি বিল নিয়ে লকেটের দাবি, কৃষকদের স্বাধীনতা দিয়েছে এই বিল। সিঙ্গুরের কৃষকরা স্বাধীনতা পেয়েছে।

অন্যদিকে তৃণমূলের বক্তব্য যে বিলের প্রতিবাদে সারা দেশ সরব সেই বিল নিয়ে ভূল বোঝাতে সিঙ্গুরে এসেছে বিজেপি। একের পর এক বিজেপির ঘনিষ্ঠতা বিজেপি ছাড়ছেন। কৃষিমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। এর থেকে লজ্জাজনক কিছু হতে পারে না। আর এই বিল নাকি ঐতিহাসিক বলে প্রচার করছে বিজেপি। এটাকে কেবল মানুষের সাথে প্রহসন ছাড়া অন্য কিছু না। সিঙ্গুরের মানুষ আর তাঁদের পাশে থাকবে না।

Loading

Leave a Reply