আজ নীল ষষ্ঠী থেকে আগামী ১৪ এপ্রিল বাংলার নববর্ষের দিন বর্ধমানের সর্বমঙ্গলা মন্দিরে ভক্তদের পুজো দেওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হল। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের নির্দেশে সমস্ত ধরনের জমায়েত নিষিদ্ধ করার ঘটনায় শহরের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য ও পরম্পরায় ছেদ পড়ল। প্রতিবছর নববর্ষ উপলক্ষে সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দেওয়ার রীতি ও প্রথা চলছে। সারা বছর ব্যবসা ভালোভাবে চলার কামনায় ব্যবসায়ীরা তাঁদের হালখাতার পুজোও করান এই সময়। কিন্তু করোনার জেরে শনিবারই সর্বমঙ্গলা মন্দিরের ট্রাস্ট কমিটির পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয় ১৪ এপ্রিল নববর্ষের দিন দেবী সর্বমঙ্গলার মন্দির পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। ভক্তদের কোনওরকম পুজোই গ্রহণ করা হবে না। এদিকে, এই ঘোষণায় রীতিমতো মর্মাহত হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ। সারাবছরের মঙ্গলকামনায় সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দেবার ঐতিহ্যে বাধা পাওয়ায় অনেকেই দুঃখপ্রকাশ করেছেন।
ট্রাস্ট কমিটির সম্পাদক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, এই অনভিপ্রেত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরাও দুঃখিত। কিন্তু সরকারি এই নির্দেশ মানতে আমরা বাধ্য। প্রতিবছর রাঢ়বঙ্গের অধিষ্ঠাত্রী দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দিরের অধীন পাঁচটি শিব মন্দিরে নীল ষষ্ঠী উপলক্ষে প্রায় ১০ হাজার মানুষের সমাগম হয়। পুলিস ও স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে ভিড় সামলাতে হয়। কিন্তু করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তাও বাতিল করা হয়েছে। আগামী নববর্ষের দুটি অনুষ্ঠানই বাতিল করা হয়েছে। বর্ষবরণ ও দেবীকে পুজো দেওয়া, হালখাতার পুজোর সমস্ত কিছুই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে, দেবীর নিত্যপুজো ও নববর্ষের দিন দেবীর যে নতুন শৃঙ্গার হয় তা একেবারেই মন্দিরের দরজা বন্ধ করে নির্দিষ্ট কয়েকজন পুরোহিতই পালন করবেন। প্রতিবছর এই নববর্ষের দিন প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ সমবেত হন। কিন্তু এবারে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ট্রাস্ট কমিটির সিদ্ধান্ত অনুসারে নববর্ষের দিন কেবলমাত্র রাজ পরিবার নিযুক্ত পাঁচটি পরিবারের একজন করে সদস্য মোট পাঁচজন পুরোহিতই মন্দিরে দেবীর পুজোয় অংশ নেবেন। অন্যান্যবার সর্বমঙ্গলা মন্দিরের সমস্ত পুরোহিতই প্রায় ১০০-রও বেশি এই সময়ে মন্দিরে হাজির হন। এবারে তাও বাতিল করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্রতিদিন দেবীর যে ভোগ প্রসাদ বিলির ব্যবস্থা থাকে, তাও বন্ধ রয়েছে।