সেই সময়টা খুব পুরনো নয়, যখন মানসিক স্বাস্থ্য ভাল না থাকলেই চট করে তাকে ‘মাথার ব্যামো’ হয়েছে বলে দেগে দেওয়া হত। আসলে শরীরের মতো মনেরও যে অসুখ করতে পারে, এই বিষয়টা সহজ ভাবে নেওয়াই হত না। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা যাতে আরও ছড়িয়ে পড়ে তার জন্য সারা পৃথিবী জুড়ে ১০ অক্টোবর পালিত হয় বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস।
উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী মানসিক রোগ বা ব্যাধির মতো মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রধান কারণ, তাদের কারণ ও প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিবছর বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য সংস্থার আয়োজন করা হয় । বিভিন্ন থিমে স্বাস্থ্য দিবসের আয়োজন । 1992 সালে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য সংস্থা প্রথম বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস ঘোষণা করেছিল । এরপর জাতিসংঘের উদ্যোগে প্রতিবছর নতুন থিম নিয়ে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালনের প্রথা চালু হয় ।
এটি উদ্বেগের বিষয় যে এখনও একটি বিশাল সংখ্যক মানুষ কোনও ধরণের মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তা বোঝা সত্ত্বেও ডাক্তারের কাছে যেতে এবং চিকিত্সা নিতে দ্বিধা করেন । সেই সঙ্গে এমন মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়, যারা সমস্যার লক্ষণ দেখালেও মানতে পারছেন না যে তাদের মানসিক সমস্যা আছে ।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, শিক্ষা, চাকরি, অস্থিতিশীল ভবিষ্যত, সম্পর্ক বা কর্মক্ষেত্রের চাপ, যেকোনও দুর্ঘটনা বা শোষণের প্রভাব এবং বর্তমান সময়ে দুর্বল জীবনধারা-সহ অনেক কারণ রয়েছে যা সব বয়সের নারী এবং পুরুষদের মানসিক সমস্যা সৃষ্টি করে । একই সময়ে, সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হল, মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হওয়া বিপুল সংখ্যক মানুষ হল শিশু এবং তরুণ প্রাপ্তবয়স্করা ।
উল্লেখযোগ্যভাবে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যানও নিশ্চিত করে বিশ্বব্যাপী মানসিক সমস্যায় ভুগছেন এমন মোট জনসংখ্যার প্রায় 16% এর বয়স 10 থেকে 19 বছরের মধ্যে । সংস্থার প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিশ্বের প্রতি চারজনের মধ্যে একজন তাদের জীবনের কোনও না কোনও সময় মানসিক ব্যাধি বা স্নায়বিক রোগের সম্মুখীন হন । একই সময়ে, বিশ্বব্যাপী প্রায় 450 মিলিয়ন মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং ব্যাধিতে ভুগছে
লক্ষণীয়, বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যা বা রোগ রয়েছে। যারমধ্যে কিছু স্নায়বিক সমস্যা, শারীরিক রোগ, বার্ধক্য এবং বংশগত কারণে হতে পারে আবার কিছু দুর্ঘটনা বা শক, শারীরিক নির্যাতন, বিচ্ছেদ বা পারিবারিক সমস্যা, একাকীত্ব, দুর্বল রুটিন এবং পরিস্থিতিগত কারণ ইত্যাদির কারণে হতে পারে ।
তাই আপনার কাছের মানুষের মানসিক অবসাদ দেখলে অবহেলা করবেন না। পাশে থাকুন, চিকিৎসা করান।