গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এবার একতরফাভাবে পঞ্চায়েতের হাতেই সমস্ত আর্থিক ক্ষমতা নয়, বুধবার রাজ্যের সমস্ত জেলার সভাধিপতি এবং জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠকে আর্থিক ক্ষমতার বড়সড় পরিবর্তন ঘটালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, করোনার উপদ্রব এখনই রাজ্য থেকে সরে যাচ্ছে না। করোনাকে মোকাবিলা করার জন্য সমস্ত রকম সাবধানতা অবলম্বনের মাধ্যমেই নুয়ে পড়া গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য সমস্ত সভাধিপতি এবং জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, এবার থেকে গ্রামীণ উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পের ১০০ শতাংশ টাকাই পঞ্চায়েতে নয়, এবার থেকে পঞ্চায়েতের ১০০ শতাংশ টাকার মধ্যে সরাসরি পঞ্চায়েতে যাবে ৭০ শতাংশ টাকা। বাকি ৩০ শতাংশের মধ্যে ১৫ শতাংশ টাকা যাবে জেলা পরিষদের হাতে এবং বাকি ১৫ শতাংশ টাকা যাবে পঞ্চায়েত সমিতির হাতে। উল্লেখ্য, এতদিন পঞ্চায়েত স্তরে উন্নয়ন মূলক প্রকল্পের টাকা সরাসরি পঞ্চায়েতের হাতেই চলে যেত। সেক্ষেত্রে জেলা পরিষদ বা পঞ্চায়েত সমিতির হাতে কেবল কাজের তদারকি ছাড়া আর্থিক কোনও ক্ষমতা ছিল না। এর ফলে কার্যতই জেলাপরিষদের ভূমিকা অনেক সংক্ষিপ্ত হয়ে পড়ছিল। কিন্তু চলতি করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী ফের জেলা পরিষদগুলিকে চাঙ্গা করার মধ্যে দিয়ে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে আরও গতিশীল করে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতিকে মোকাবিলা করার পন্থা নিলেন।
জানা গিয়েছে, গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার লক্ষ্য নিয়ে একাধিক বিষয় সম্পর্কে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ১০০ দিনের কাজকে আরও গতিশীল করতে পরিযায়ী শ্রমিকদেরও তার সঙ্গে যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকী অসংগঠিত শ্রমিক যাঁরা এতদিন ১০০ দিনের কাজ করতেন না, তাঁদেরও যুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে ১০০ দিনের কাজে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা এবং মাস্ক ব্যবহারকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একইসঙ্গে এই মাস্ক তৈরির জন্য স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দায়িত্ব দিয়ে তাঁদেরও রোজগারের রাস্তা খুলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ১৯ ও ২০ মে ঝড়ের পূর্বাভাস সম্পর্কেও সমস্ত জেলাকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী জুলাই মাস থেকে রেশনের মাধ্যমে চাল এবং তার সঙ্গে গম দেওয়া হবে। এব্যাপারে কোথাও যাতে স্বজনপোষণ বা দুর্নীতি না হয় সে ব্যাপারে জেলাশাসক এবং সভাধিপতিদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।