ঋদি হক, ঢাকাঃ- করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই প্রথম ধাপে চালু হলো ৮৬৫টি গার্মেন্টস। অবশ্য এটিকে সীমিত আকারে বলা হচ্ছে। রবিবার খোলা শুরু হলেও সোমবার থেকে কাজ শুর হয়ে গেল এসব কারাখানায়। শ্রমঘন এলাকায় ধীরে ধীরে ফিরতে শুরু করে পরিচিত চিত্র। পর্যায়ক্রমে ৩ মে নাগাদ সকল কারাখানা পুরো দমে চালু হবে। কারণ, শতভাগ রপ্তানিখাত তৈরি পোশাক শিল্পের এখনও পর্যন্ত ৩ বিলিয়ন ডলারের ওপর অর্ডার বাতিল হয়েছে। তারপরও বহু অর্ডার রয়েছে। সেগুলো রক্ষা এবং অর্ডারগুলো দ্রুত শিপমেন্ট করা না গেলে তাও বাতিল হয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোতে একবার অর্ডার চলে গেলে তা ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে। তাই সীমিত শ্রমিক নিয়ে স্বাস্থ্য বিধি মেনে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরি। শনিবার এপ্রিল সন্ধ্যায় পোশাক কারখানা খোলার বিষয়টি অবহিত করে বিজিএমইএ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি পাঠায়। একই সিদ্ধান্ত নেয় পোশাক শিল্প মালিকদের অপর সংগঠন বিকেএমইএ।
এরপর শ্রম মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানা চালুর জন্য শনিবার রাতে নির্দেশনা জারি করে। তিন ধাপে কারখানা খালার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পোশাক মালিকদের সংগঠনগুলো। প্রথম পর্যায়ে রবিবার ও সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকা এবং নারায়ণগঞ্জ এলাকার নিটিং, ডায়িং ও স্যাম্পলিংয়ের কারখানা চালু হবে। ২৮ থেকে ৩০ এপ্রিল আশুলিয়া, সাভার, ধামরাই ও মানিকগঞ্জের কারখানা, ৩০ এপ্রিল রূপগঞ্জ, নরসিংদী, কাঁচপুর এলাকা, ২ ও ৩ মে গাজীপুর ও ময়মনসিংহ এলাকার কারখানা চালু করা হবে। কারখানা খোলার ক্ষেত্রে শুরুতে উৎপাদন ক্ষমতার ৩০ শতাংশ চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা বাড়ানো হবে। তবে এখন কোনো শ্রমিক ঢাকার বাইরে থেকে নিয়ে আসতে পারবেন না কারখানার মালিকরা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ‘লকডাউন এবং সমাজিক দূরত্ব নিশ্চিত’ এই দুটো বিষয়কে পহেলা নাম্বারে প্রয়োগের পন্থা অবলম্বন করতে বলা হয় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তরফে। বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে পা না রাখা এবং সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করাই একজন মানুষ বর্তমান মারণ ভাইরাসের কবল থেকে রক্ষায় বড় অস্ত্র। এই বিবেচনা গোটা দুনিয়া এই পথে হাঁটতে শুরু করে। যারা মানছেন তার সুফলও পাচ্ছেন।
সামাজিক দূরত্বের কথা বার বার উচ্চআরণ করা অর্থ হচ্ছে, করোনা সামাজিক সংক্রমণ ঘটিয়েই কিন্তু আজ দুনিয়াকে গ্রাস করেছে। রূপ নিয়ে মহামারিতে। দুনিয়া যুগে যুগে অনেক বাইরাসের সৃষ্টি হয়েছে এবং তা এক বা একাদিক দেশে সীমাবদ্ধ ছিলো। কিন্তু করোনাভাইরাসের মতো এমন লাখো প্রাণ সংহারি ভাইরাস পৃথিবীতে এটিই প্রথম! ঠিক এই অবস্থায় রবিবার থেকে সীমিত আকারে চালু করা হলো পোশাক কারখানা। এরপর ধাপে ধাপে সব কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে পোশাক কারখানার ক্রয়াদেশ বহাল রয়েছে। এসব অর্ডার যেন বাতিল না হয় তাই কারখানা খুলে দেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন পোশাক কারখানার মালিকরা। বিষয়টি বিবেচনায় সরকারের অনুমতিতে প্রথমে সীমিত আকারে চালু থাকবে পোশাক কারখানা। পরে ধাপে ধাপে সব কারখানা খুলে দেয়া হবে। বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত পোশাক কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছিলো।